মহেশখালীতে অস্ত্রসহ ৩ জলদস্যু আটক, ১৬ জেলে উদ্ধার

পুলিশের সঙ্গে আটক তিন জলদস্যু
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে অভিযান চালিয়ে তিন জলদস্যুকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। পরে জলদস্যুদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৬ জেলেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

অভিযানে ২টি কিরিচ, ১টি রামদা, ২টি হাতঘড়ি, জেলেদের ১০টি মুঠোফোন ও ১টি মাছ ধরার নৌকা জব্দ করে পুলিশ। জেলেদের কক্সবাজার শহরের সমিতির পাড়ার পশ্চিমে সাগরে ভাসমান একটি মাছ ধরার বিকল নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

আটক জলদস্যুরা হলেন মোহাম্মদ কাইছার (১৯), মোহাম্মদ সোনা মিয়া (১৯) ও মোহাম্মদ তারেক (২৬)। তাঁরা সবাই উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।

থানা-পুলিশ জানায়, গত রোববার রাতে বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে নাজিরাটেক এলাকায় নোঙর করেন ১৬ জন জেলে। তাঁদের মাছ ধরার নৌকায় হানা দেন জলদস্যুরা। জলদস্যুরা ওই মাছ ধরার নৌকায় উঠে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১০টি মুঠোফোন, নগদ টাকা, মাছসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যান। জলদস্যুরা যাওয়ার সময় মাছ ধরার নৌকাটি বিকল করে দেন। ১৬ জন জেলে নিয়ে বিকল অবস্থায় সাগরে ভাসতে থাকে নৌকাটি।

এদিকে জেলেদের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ওই নৌকার মালিক বাহারছড়া এলাকার শাহাদাত হোসেন মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ ১৬ জেলে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ জন্য তাঁদের উদ্ধারে মহেশখালী থানার সহায়তা চান তিনি। পরে শাহাদাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী পুলিশ সুপার(মহেশখালী সার্কেল) আবু তাহের ফারুকী ও মহেশখালী থানার পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক মীরের নেতৃত্বে নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অভিযানে নামে পুলিশ।

এএসপি আবু তাহের ফারুকী বলেন, অভিযোগের পর গতকাল বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় জেলেদের লুণ্ঠিত মুঠোফোন ট্র্যাক করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মনজুরের বাড়িতে কয়েকজন জলদস্যুর অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে মনজুরের বাড়ি থেকে ৩টি অস্ত্র, ২টি কিরিচ, ১টি রামদা, ২টি হাতঘড়ি, ১০টি মুঠোফোন ও ১টি মাছ ধরার নৌকার ইঞ্জিনের সেলফ জব্দের পাশাপাশি জলদস্যু মোহাম্মদ কাইছার ও মোহাম্মদ সোনা মিয়াকে আটক করা হয়। এ সময় ধাওয়া করে মোহাম্মদ তারেক নামের আরেক জলদস্যুকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, আটক জলদস্যুরা সাগরে শাহাদাতের মালিকানাধীন মাছ ধরার নৌকায় ডাকাতি করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে আরেকটি নৌকা নিয়ে কক্সবাজার শহরের সমিতির পাড়ার পশ্চিমে সাগরে ভাসমান অবস্থায় ওই ১৬ জেলেকে উদ্ধার করা হয়।

এএসপি আবু তাহের ফারুকী বলেন, অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আটক তিন জলদস্যুসহ চারজনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় একটি মামলা হয়েছে। আর মাছ ধরার নৌকায় ডাকাতির ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আটক তিন জলদস্যুর বিরুদ্ধে আরও একটি ডাকাতির মামলা হবে।