রামুতে বিজিবি-চোরাকারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪ বিজিবি সদস্য

সংঘর্ষে আহত বিজিবি সদস্যরা
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের রামু উপজেলার পূর্ব কাউয়ারখোপ এলাকায় মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আনা গরু জব্দের ঘটনায় চোরাকারবারিদের সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আবদুল জব্বার (৪০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বিজিবির চার সদস্য। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে পূর্ব কাউয়ারখোপ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবদুল জব্বার জামে মসজিদ এলাকার বাসিন্দা। বিজিবির দাবি, তিনি গরু চোরাকারবারি।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তির লাশ হস্তান্তর করা হয়নি। লাশটি নাইক্ষ্যংছড়িতে রয়েছে। তবে এ ঘটনায় রামু থানায় মামলা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৯টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ছয়টি গরু সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের কাউয়ারখোপ ডেফারকুল নিয়ে আসে কয়েকজন চোরাকারবারি। সেখান থেকে গরুগুলো রামুর পূর্ব কাউয়ারখোপ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসংলগ্ন এলাকায় আনা হলে বিজিবি টহল দল চোরাই গরুগুলো জব্দ করে। এ সময় চোরাকারবারিরা হইচই শুরু করে গ্রামের লোকজনকে জড়ো করে এবং বিজিবি সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। একপর্যায়ে বিজিবি ও চোরাকারবারিদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বিজিবি চার সদস্য আহত হন। বিজিবি সদস্যরা তখন কয়েকটি গুলি ছোড়েন। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ আবদুল জব্বার ও আহত বিজিবি সদস্যদের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক আবদুল জব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিজিবির আহত তিন সদস্যকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আজিজুল হক জানান, বিজিবি-গরু চোরাকারবারির মধ্যে সংঘর্ষে আবদুল জব্বার নিহত হয়েছেন। আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আবদুল জব্বারের লাশ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছিল।

সংঘর্ষের ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ১১ বিজিবির পক্ষ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিজিবি টহল দলের ওপর চোরাকারবারিদের আক্রমণের ঘটনায় বিজিবির চার সদস্য আহত হয়েছেন। রাতে সীমান্তের চোরাই গরু জব্দ করে টহল দল হেঁটে ক্যাম্পে ফেরার সময় ২০০ থেকে ৩০০ লোক দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেলসহ বিজিবি টহল দলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় বিজিবির চার সদস্য আহত হন। তাঁদের মধ্যে হাবিলদার মো. মোহাইমিনুল ইসলাম, নায়েক মো. লুৎফর রহমান ও নায়েক মো. আবুল কালামকে গুরুতর আহত অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।