মোংলায় দুটি ভোল মাছ বিক্রি সাড়ে ১৮ লাখ টাকায়
বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় সুন্দরবনের দুবলার চরে জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির দুটি সামুদ্রিক দাঁতিনা ভোল মাছ। গতকাল শুক্রবার রাতে ফারুক হোসেন নামের এক জেলের জালে মাছ দুটি ধরা পড়ে। মাছ দুটির ওজন ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম।
মাছ দুটিকে দুবলার চর থেকে কিনে আজ শনিবার বিকেলে মোংলায় নিয়ে আসেন মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ‘মেসার্স জয়মনি ফিশ’ নামের আড়তের মালিক আল আমিন। তিনি মাছ দুটি কেনেন ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। খবর পেয়ে মাছ দুটি দেখতে মোংলার মাছ বাজারের ভিড় করে মানুষ।
মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, দাঁতিনা ভোল মাছের বিশেষ ধরনের ফুলকা রয়েছে, যার প্রতি কেজির মূল্য কয়েক লাখ টাকা। দাঁতিনা, কইয়া ভোল, লাল ভোল ও জাবা মাছের ফুলকারও অনেক দাম।
আড়ত মালিক আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম দিকে পাঁচ মাসের জন্য বঙ্গোপসাগরের পাঁচটি চরাঞ্চলে শুঁটকি তৈরির জন্য মৎস্য শিকারে যান অনেক জেলে। এর মধ্যে মোংলার জয়মনির ঘোল এলাকার জেলে ফারুক হোসেনও আছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে সাগরে তাঁর জালে ধরা পড়ে দুটি বড় আকারের দাঁতিনা ভোল মাছ। শেষ রাতে সাগর থেকে দুবলার চরে এসে সেখানকার মৎস্য আড়তে মাছ দুটিকে নিলামে তোলেন তিনি। ওই নিলামে ২০ থেকে ২৫ জন দরদাতার মধ্যে সর্বোচ্চ দাম হাঁকেন মোংলা বাজারের মাছ ব্যাবসায়ী আল আমিন। তিনি মাছ দুটিকে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেন। এর মধ্যে বড় মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, দাম ওঠে ১১ লাখ টাকা এবং ছোট মাছটির ওজন হয় ২৭ কেজি, দাম ওঠে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ দুটির প্রতি কেজির মূল্য পড়েছে ২৯ হাজার ১৩৩ টাকা।
মাছ দুটিকে সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও মোড়কজাত করার পর বেশি দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আল আমিন।
মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ও মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল ফরাজী প্রথম আলোকে বলেন, সুন্দরবনের নদ-নদীতে এই প্রজাতির মাছ পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ মাছের ফুলকা বিদেশে রপ্তানি করা হয়, যা দিয়ে ওষুধ তৈরি করা হয়। গত ১০ বছরে মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র দাঁতিনা ভোল মাছ আসেনি। দুবলার চর থেকে কেনা মাছ দুটি চট্টগ্রামে আরও বেশি দামে বিক্রি হবে বলেও মনে করেন আফজাল ফরাজী।