‘খেলা হবে’ স্লোগান দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলা

হামলাপ্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে সন্তোষপুর ইউনিয়নের মুন্সিরহাট বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে নৌকার কর্মীদের বিরুদ্ধে। ‘খেলা হবে’ বলে স্লোগান দেওয়ায় এ হামলা হয় বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে এ হামলায় স্বতন্ত্র পক্ষের তিনজন ও নৌকার পক্ষের একজন কর্মী আহত হন।

ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে নৌকার পাঁচ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন কামাল উদ্দিন (৫৮), মো. নাজমুল (২৩), মো. রিয়াদ (২০), মো. ফরহাদ (২৮) ও মো. মাহিম (১৮)। তাঁরা সবাই সন্তোষপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন সন্তোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমানের ছেলে মাহমুদুর রহমান, তাঁর ভাইয়ের ছেলে মো. আকবর হোসেন ও ভাগনে মহব্বত আলী। নৌকার আহত কর্মীর নাম মো. মাহিন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের পক্ষ থেকে শাওন নামের আরও একজন আহত হওয়ার দাবি করা হয়।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাল উদ্দিন চৌধুরীর (ঈগল) পক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন সন্তোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান। তিনি মুঠোফোনে বলেন, গতকাল রাত আটটার কিছুক্ষণ আগে গণসংযোগ শেষে তাঁদের নেতা-কর্মীরা যে যাঁর মতো বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় মুন্সিরহাট বাজারে বর্তমান চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন জাফরের নেতৃত্বে তাঁর ছেলে মিঠুনসহ নৌকার কর্মীরা মিছিল করে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করেন। মারধরে তাঁর এক হাত ভেঙে যায়। তাঁদের পাঁচজন হামলার শিকার হয়েছেন। গুরুতর আহত তাঁর ছেলে মাহমুদুর রহমানের মাথায় ১২টি ও ভাইপো আকবরের মাথায় ১১টি সেলাই করতে হয়েছে। ভাগনে মহব্বতকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মাথা ফাটা অবস্থায় মাহমুদুর রহমানের ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, নৌকার পক্ষের লোকজন জড়ো হতে দেখে তিনি সন্দ্বীপ থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ নামের এক কর্মকর্তাকে ফোন করেন। এর কিছুক্ষণ পর তাঁর বাবার ওপর লাঠি নিয়ে হামলা চালান নৌকার পক্ষের লোকজন। বাবাকে রক্ষা করতে তিনি ও অন্য কর্মীরা এগিয়ে গেলে লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন জাফর মুঠোফোন বলেন, রাত আটটার দিকে ‘খেলা হবে, আসো খেলব’, এ রকম উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন। তখন বাজারে তাঁদের পক্ষের লোকজনও উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনের সময় এ রকম উসকানিমূলক স্লোগান দিলে প্রতিপক্ষের উত্তেজিত হওয়া স্বাভাবিক। ফলে সেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়।

চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে এবারের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান (নৌকা) এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর (ঈগল) মধ্যে। এর আগে ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মুছাপুর ইউনিয়নের আলী মিয়া বাজারের সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করে। নির্বাচনী প্রচার শুরুর এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলার এই দুই পক্ষ পাঁচবার পাল্টাপাল্টি হামলায় জড়িয়েছে বলে জানা যায়।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে মুন্সিরহাট বাজারে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় নৌকার পক্ষের পাঁচজনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।