গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দাবিতে আ.লীগের বিক্ষোভ

নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণার দাবিতে দুই উপজেলায় পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সাঘাটা উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে থেকে মিছিল বের করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফুলছড়ি উপজেলায় মিছিল ও সড়কের ওপর আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসানের সমর্থকেরা এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন।

গতকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে ভোট শুরুর পর থেকেই অনিয়মের কারণে একের পর এক কেন্দ্রের ভোট বাতিল করতে থাকে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুপুর নাগাদ এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রের ভোট বাতিল করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে বেলা আড়াইটার দিকে পুরো ভোট গ্রহণই বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

তবে সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণার দাবিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম সেলিম পারভেজের নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে মিছিলটি উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কের ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।

এতে দুপুর ১২টা থেকে বেলা পৌনে ১টা পর্যন্ত ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ছিল। এর একপর্যায়ে বৃষ্টি শুরু হলে নেতা-কর্মীরা সড়কের ওপর থেকে সরে যান।

পরে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান, গজারিয়া ইউপির চেয়ারম্যান খোরশেদ আলী খান, উদাখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গতকাল সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তারপরও নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করার কোনো কারণ নেই। তাঁরা বলেন, যেসব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর ফলাফল অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।

এদিকে একই দাবিতে আজ দুপুর ১২টার দিকে সাঘাটা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মিছিল বের করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। মিছিলটি উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বোনারপাড়াস্থ সাঘাটা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সাঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামশুল আরেফিন ও সাধারণ সম্পাদক নাছরুল আলম, বোনারপাড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আহসান কবির প্রমুখ।

গতকাল সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, এই উপনির্বাচনে ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে প্রায় সারা দিন ভোট দিয়েছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তারা কারও কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অথচ অজ্ঞাত কারণে কমিশন নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সাধারণ ভোটারদের হতাশ করেছে। তাই সম্পন্ন হওয়া কেন্দ্রগুলোর ফলাফল অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁরা হলেন—আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত এ এইচ এম গোলাম শহীদ, বিকল্পধারার মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান এবং সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। এর মধ্যে গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য চার প্রার্থী ভোট বর্জন করেন। এ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।