সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা চুয়েট শিক্ষক সমিতির
আগামী সোমবার থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শিক্ষক সমিতি। অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিমের’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে এ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার চুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি জি এম সাদিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো. আরাফাত রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে চুয়েট শিক্ষক সমিতি কাল রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং পরদিন সোমবার থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে। কাল পরীক্ষা কার্যক্রম চললেও পরদিন থেকে সব ধরনের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকবে।
গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকেরা। ওই দিন ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতির পাশাপাশি ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তাঁরা। ঘোষণা অনুযায়ী গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার তিন দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা।
চুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি জি এম সাদিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের কর্মসূচির সঙ্গে চুয়েটের শিক্ষকেরা একাত্মতা পোষণ করেছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। যেহেতু এখনো আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ সরকারের প্রতি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকদের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘তিন দিন কর্মবিরতির পরও সরকারের উচ্চ মহল থেকে আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হয়নি। তাঁরা আলোচনার কোনো ইচ্ছাই দেখাননি; বরং আমরা আলোচনার জন্য চেষ্টা করেছি। রোববার আমরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব। এদিন পরীক্ষা ও ভর্তি কার্যক্রম চলমান থাকবে। তবে দাবি আদায় না হলে ১ জুলাই থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকেরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন। তখন সব একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
গত বছর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়। গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, আগামী ১ জুলাইয়ের পর থেকে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার চাকরিতে যাঁরা নতুন যোগ দেবেন, তাঁরা বিদ্যমান ব্যবস্থার মতো আর অবসরোত্তর পেনশন–সুবিধা পাবেন না। তার পরিবর্তে নতুন চাকরিজীবীদের বাধ্যতামূলক সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষকেরাও এই স্কিমে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।