মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবার মাথায় কুড়ালের কোপ
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় কলেজপড়ুয়া মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বখাটে তরুণের বিরুদ্ধে। হামলার শিকার ওই ব্যক্তির নাম মিজানুর রহমান ওরফে মিলন (৫৫)। গত শুক্রবার রাত ১০টায় উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মিজানুর রহমানের মাথা মারাত্মকভাবে কেটে গেছে। পরিবারের লোকজন তাঁকে প্রথমে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত তরুণ আত্মগোপনে রয়েছেন।
হামলার শিকার মিজানুর রহমানের ছোট ভাই মো. ফরিদ প্রথম আলোকে বলেন, সঞ্জয় রায় (২৫) নামের স্থানীয় এক তরুণ তাঁর কলেজপড়ুয়া ভাতিজিকে কলেজে আসা–যাওয়ার পথে প্রায় সময় উত্ত্যক্ত করতেন। তাঁরা বিষয়টি ওই তরুণের পরিবারকে জানালে ছেলেকে শাসন করবে বলে আশ্বস্ত করে। কিন্তু তাতেও ওই তরুণের বখাটেপনা থামেনি।
ফরিদের অভিযোগ, কয়েক দিন আগে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই তরুণ তাঁর ভাতিজির হাত ধরে টান দেন। সে বাড়িতে এসে ঘটনাটি জানালে তাঁরা দুই ভাই ওই তরুণের পরিবারের কাছে আবার অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সঞ্জয় চায়নিজ কুড়াল নিয়ে অতর্কিতে তাঁদের দুই ভাইয়ের ওপর হামলা চালান। এ সময় কুড়ালের কোপে তাঁর বড় ভাই মিজানুরের মাথায় মারাত্মক জখম হয়। আর তিনি সরে যাওয়ায় তাঁর হাতে হালকা আঘাত পান। একই সময় প্রতিবেশী এক নারী এগিয়ে এলে তাঁকেও আঘাত করেন ওই তরুণ।
ফরিদ জানান, ঘটনার পর তাঁরা তাঁর বড় ভাই মিজানুর রহমানকে প্রথমে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিন দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই হাসপাতালে তাঁর ভাই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত তরুণের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরা জানান, শুক্রবার রাতের ওই হামলার ঘটনার পর থেকে তরুণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে আত্মগোপন করেছেন। তাই এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করার কথা তাঁরা শুনেছেন। তবে পরিবারের কেউ আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত থানায় অভিযোগ নিয়ে যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
থানায় অভিযোগ না করার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. ফরিদ বলেন, ভাইয়ের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অভিযোগ করতে দেরি হচ্ছে। তবে আজ আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ লিখে থানায় জমা দেবেন।