ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা ফিরোজুর রহমানের সমর্থনকারী শতকরা ১ ভাগ ভোটারের প্রায় আড়াই শ স্বাক্ষরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের শাহপুর ওয়ার্ডের হালকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য ফিরোজুর রহমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। ২২ নভেম্বর তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তিনি এ আসনে আওয়ামী লীগের একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার হালকাটা (খালটা) এলাকায় আমার দুই কর্মী মুহিবুর রহমান ও তাঁর ভাতিজা মো. আলামিন শতকরা ১ ভাগ ভোটারের প্রায় আড়াই শ স্বাক্ষরপত্র নিয়ে আমার বাড়ির উদ্দেশ্যে আসছিল। এ সময় সাত-আটজন যুবক মোটরসাইকেলে ঘেরাও করে আমার দুই কর্মীর কাছ থেকে ভোটারদের স্বাক্ষরপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যান।’
ফিরোজুর রহমান আরও বলেন, ‘ভোটার স্বাক্ষরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার সময় সাত-আটজন যুবক জানান, এই স্বাক্ষরপত্র তাঁরা জমা দিতে পারবেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারি তাঁদের পাঠিয়েছেন বলে আমার কর্মীদের তাঁরা জানিয়েছেন।’ তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট প্রার্থীর সমর্থক হিসেবে এলাকার শতকরা ১ ভাগ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। গত বুধবার রাতে ও সমর্থনকারী অনেকেই স্বাক্ষর দিলেও তাঁদের নানাভাবে ভয়-হুমকি দেখানো হয়। স্বাক্ষর দেওয়ার পর অনেকেই স্বাক্ষরপত্র নিয়ে যান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুলতানপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শাহানা বেগমের ছেলে অবুঝসহ কয়েকজন ১৫০ ভোটারের স্বাক্ষর তালিকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। আমরা মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পাইনি। এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে ভোটার তালিকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের বলেছি।’
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুসা আনসারি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়। আমি এটা করতে যাব কেন। তিনি (ফিরোজুর রহমান) ও আমি একই এলাকার বাসিন্দা। ফিরোজুর রহমান একেক সময় একেক রকম কথা বলছেন।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি (ফিরোজুর রহমান) আমাকে কারও নাম বলেননি। মৌখিকভাবে জানিয়েছেন কয়েকজন তাঁর ভোটার তালিকার সমর্থনকারীদের স্বাক্ষরপত্র নিয়ে গেছেন।’ তবে তাঁর (ফিরোজুর) কাছে অতিরিক্ত ভোটারদের স্বাক্ষরপত্র রয়েছে। তাঁর কোনো সমস্যা হবে না। আর তিনি লিখিত অভিযোগ দেননি।