সংসদ সদস্য ও ইউএনও শুনলেন ভুক্তভোগীদের কথা

কুষ্টিয়া কুমারখালীতে নির্বাচনের দিন হামলার শিকার হিন্দু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলনে সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ। রোববার দুপুরে পীতাম্বরবসী গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পীতাম্বরবসী গ্রামে হামলার শিকার হিন্দু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এ সময় ভুক্তভোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলো মেরামত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুর রউফ (ট্রাক প্রতীক) বিজয়ী হন। তিনি সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে (নৌকা প্রতীক) পরাজিত করেন। সেলিম আলতাফ যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।

৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের পর পান্টি ইউনিয়নের এ গ্রামে কয়েকটি হিন্দু পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে আছেন। তাঁদের অভিযোগ, নৌকায় ভোট দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন তাঁদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ভোটের দিন সন্ধ্যার পর সাতটি বাড়িতে হামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে দুটি পরিবারের তিনজন সদস্য বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন। গতকাল শনিবার সকালেও তিনজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়েছেন। এ নিয়ে গতকাল প্রথম আলো অনলাইনে ‘ভোটের পর হামলার শঙ্কায় বাড়িছাড়া কয়েকটি হিন্দু পরিবার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ রোববার বেলা ১১টার পর কুষ্টিয়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুর রউফ তাঁর নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওই গ্রামে যান। সেখানে গ্রামের সর্বজনীন কালীমন্দিরের সামনে হিন্দু পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা ভোটের দিন সন্ধ্যার ঘটনার বর্ণনা দেন।

সংসদ সদস্য আবদুর রউফ বলেন, এখানে যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর সবাই মিলে শান্তিতে বসবাস করতে যা করা দরকার, সেটা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে। পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে কাউকে কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যার দিকে কুমারখালীর ইউএনও মাহবুবুল হক পীতাম্বরবসী গ্রামে যান। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শকের মুঠোফোন নম্বর সবাইকে জানিয়ে দেন। নিজের নম্বরও দিয়ে আসেন। যাঁরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন, তাঁদেরও বাড়ি ফেরার জন্য বলেন।

আরও পড়ুন

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে দুটি পরিবারের তিনজন সদস্য বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন, আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা বাড়ি ফেরেননি। তাঁদের একজন বীরেন মণ্ডল বলেন, তিনি শুনেছেন এলাকায় সংসদ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা গিয়েছিলেন। তবে এলাকায় গেলে মারধর করা হতে পারে, এ জন্য তিনি যাচ্ছেন না।

রবি দাস বলেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী খুবই আতঙ্কে আছেন। এলাকায় ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না। তাঁরা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেদিনের রাতের ঘটনায় তাঁরা খুবই আতঙ্কিত। পরের দিন সকালে দ্রুত বাড়ি ছেড়ে বের হয়ে চলে যান।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে। থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।