সদ্যোজাত সন্তান দত্তক দিয়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

গাজীপুরের শ্রীপুর শহরের বেসরকারি একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন এক মা। পরে সেই সন্তান দত্তক দিয়ে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেছেন তিনি। এ বিষয়ে অবশ্য ওই নারীর কোনো অভিযোগ নেই। স্বেচ্ছায় তাঁর সন্তান দত্তক দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।

শ্রীপুর পৌর শহরের ‘নিউ এশিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি ক্লিনিকে ২১ মে রাতে এ ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

সন্তান দত্তক দেওয়া ওই মায়ের নাম প্রিয়া আক্তার (২৫)। তাঁর বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়। তাঁর স্বামীর নাম রাসেল মিয়া। রাসেলের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায়। পেশায় দিনমজুর রাসেল ও প্রিয়া দম্পতির আরও দুটি সন্তান আছে।

প্রিয়া আক্তার জানান, ২১ মে প্রসববেদনা নিয়ে তিনি নিউ এশিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন। হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে তাঁর একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। হাসপাতালের বিল হয় ১৬ হাজার টাকা। কিন্তু বিল পরিশোধ করার মতো অবস্থা না থাকায় তিনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে বিল কমানোর বিষয়ে কথা বলেন। পরে ক্লিনিকের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক ব্যক্তির কাছে সন্তান দত্তক দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

প্রিয়া আক্তার বলেন, প্রস্তাবে রাজি হয়ে তিনি জাহাঙ্গীরের মধ্যস্থতায় ৩০ হাজার টাকায় নিজের সন্তানকে দত্তক দেন। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিল বাবদ ১৬ হাজার টাকা রেখে বাকি ১৪ হাজার টাকা তাঁর কাছে তুলে দেন। ওই প্রসূতি মা বলেন, ‘ছেলে হলে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যাইত। মেয়ে হওয়ায় ৩০ হাজার টাকা দিয়েছে।’ এ ঘটনায় কারও কাছে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

ক্লিনিকের পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম মধ্যস্থতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ক্লিনিকে এমন কোনো মধ্যস্থতা হয়নি। ২১ মে সিজার হয়েছে। ওই নারী নিজেই কথা বলে দত্তক দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’