২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মুন্সিগঞ্জে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় ৯ কিশোর আটক

নিহত নীরব হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের জের ধরে এসএসসি পরীক্ষার্থী নীরব হোসেনকে হত্যার ঘটনায় নয় কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটক নয়জনের বাড়ি উপজেলার বাঘরার মাগডাল, পশ্চিম কামারগাাঁও, উত্তর কামারগাঁও, জগন্নাথপট্টি ও কাদিরকান্দা এলাকায়। তাদের মধ্যে তিনজনের বয়স ১৪ বছর, একজনের বয়স ১৬ বছর ও পাঁচজনের বয়স ১৭ বছর।

শ্রীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ওয়াহিদ পারভেজ আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকালের ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কিশোরদের আটক করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এরপর রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চার কিশোরকে ও ভোরে পাঁচ কিশোরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় নিহত পরীক্ষার্থীর মা দিলারা বেগম বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আরও পড়ুন

এর আগে এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদের জেরে গতকাল বিকেলে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মো. নীরব হোসেনকে (১৭)। নীরব চাঁদপুরের বাসিন্দা প্রয়াত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর শ্রীনগরের মধ্য কামারগাঁও এলাকায় মামার বাড়িতে থাকত নীরব। সে স্থানীয় কাজী ফজলুল হক উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছে। পরে লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়। একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় আবার তার এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার কাজী ফজলুল হক উচ্চবিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান ছিল। ওই দিন দুপুরে বিদ্যালয়ের ফটকের সামনে কয়েকজন মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিলেন মাগডাল গ্রামের তরুণ আরেফিনসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি দেখে নীরব, কাজী ওহিদুলসহ (২০) তিনজন প্রতিবাদ করে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। স্থানীয় লোকজন তাদের ঝগড়া থামিয়ে যার যার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বিকেলে কামারগাঁওয়ের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বসে ছিল নীরব ও ওহিদুল। আগের দিনের ঘটনার জেরে আরেফিনসহ ১০ থেকে ১২ জন তাঁদের ওপর হামলা করেন। এ সময় ওহিদুল পালাতে পারলেও নীরব পালাতে পারেনি। হামলাকারীরা নীরবকে ছুরিকাঘাত করে পাশের একটি খালে ফেলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হোসেন বলেন, আরেফিন কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে শুক্রবার নীরবকে তারা হত্যা করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘ওরা খুবই ভয়ংকর। কয়েক মাস আগে ভাঘরারচরে একটি হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। সেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও ওরা জড়িত ছিল।’