যশোর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার

আনোয়ার হোসেনছবি: সংগৃহীত

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ায় সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন ওরফে বিপুলকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আনোয়ার হোসেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হলেও বর্তমানে আওয়ামী লীগের কোনো পদ–পদবিতে নেই। দুই ভাগে বিভক্ত জেলা আওয়ামী লীগের এক ভাগের নেতৃত্বে আছেন সদরের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, অন্য ভাগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। আনোয়ার কাজী নাবিলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি জেলা যুবলীগের আগামী সম্মেলনে কাজী নাবিলের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।

জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মজিবুদ্দৌলা কনকের সঞ্চালনায় জরুরি সভায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি শহিদুল ইসলাম। এতে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আফজাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক মুন্সী মহিউদ্দীন, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক সাইফুদ্দিন প্রমুখ।

সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় দলের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলসহ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়া আনোয়ার হোসেন যাতে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী কোনো সংগঠনে পদ-পদবি না পান, সে জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভায়।

শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আনোয়ার ফেসবুক লাইভে দল ও প্রশাসনের শীর্ষ লোকজনকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেন, যা দলের শৃঙ্খলাপন্থী। শুধু এ ঘটনা নয়; আগেও তিনি শীর্ষ নেতাদের নিয়ে মিথ্যা ও বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। চাঁদাবাজি ও মানহানির মামলায় আনোয়ার পলাতক। তিনি ভারতে আত্মগোপন করেছেন বলে শুনেছেন। তিনি দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এদিকে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি ও মেসার্স নদী বাংলা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আরেকটি চাঁদাবাজির মামলা করেছেন। ওই দুই মামলায় বর্তমানে পলাতক আছেন আনোয়ার হোসেন। যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, আনোয়ার দুটি মামলার পলাতক আসামি। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় আনোয়ার হোসেন নিজের ফেসবুকে লাইভে এসে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ বিভিন্ন পদধারী নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নামে ‘কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্য দেন। এ ঘটনায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মানহানি মামলা করেন। ঘটনার এক মাস পর আজ জরুরি সভা ডেকে তাঁকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ বহিষ্কার করা হলো।