প্রতিটি মামলায় আসামি করার হুমকিদাতা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি, থানায় জিডি
শরীয়তপুরে এক সাংবাদিককে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি নেতা মতিউর রহমান ওরফে সাগরের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দলটি। হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ওই সাংবাদিক।
অভিযুক্ত মতিউর রহমান নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার ঘড়িষার ইউনিয়নের নোয়াদ্দ বাংলাবাজার এলাকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সাবেক ডিলার। অন্যদিকে অভিযোগকারী ব্যক্তির নাম আশিকুর রহমান। তিনি একটি অনলাইনভিত্তিক নিউজপোর্টালের শরীয়তপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
অভিযোগ আছে, একটি সংবাদ প্রকাশের জেরে গত মঙ্গলবার রাতে আশিকুর রহমানকে মুঠোফোনে মামলায় জড়ানোর ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন মতিউর রহমান।
তদন্ত কমিটি গঠনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ। তিনি বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সূত্রে জানা গেছে, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে চাল বিতরণে অনিয়ম ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে সত্যতা মেলায় ২৪ সেপ্টেম্বর তাঁর ডিলারশিপ বাতিল করে খাদ্য অধিদপ্তর। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাইয়ুম খানের ওপর ক্ষুব্ধ হন মতিউর। ইউএনওর বিরুদ্ধে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি ও দুই লাখ টাকা গ্রহণের অভিযোগ এনে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করেন মতিউর। এ বিষয়ে আশিকুরের তৈরি একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ওই অনলাইন পোর্টালে। পরে মতিউর রাতেই ওই সাংবাদিককে ফোন করে হুমকি ও গালিগালাজ করেন। বলেন, নড়িয়ায় যদি কোনো রাজনৈতিক মামলা হয়, ওই সাংবাদিক নিজে প্রতিটির আসামি হবেন।
এ ঘটনায় আশিকুর রহমান গতকাল রাতে ভেদরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। অন্যদিকে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির পক্ষ হতে ওই ঘটনা তদন্ত করার জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জিডির সত্যতা নিশ্চিত করে ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে মতিউর রহমান জানান, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ওই সাংবাদিক (আশিকুর) ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর পেছনে লেগে নিউজ করেছেন। বিষয়টি জিজ্ঞেস করার জন্যই মূলত আশিকুরকে ফোন করেছিলেন।