‘দুর্ভাগ্যবশত দুনিয়াটা ভাল লাগতেছে না’—চিরকুটে লেখা যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাড়ির নিজ কক্ষ থেকে এক তরুণের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর পড়ার টেবিল থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। স্বজন ও পুলিশের ধারণা, ওই তরুণ আত্মহত্যা করেছেন। নিহত তরুণের নাম মো. জোনায়েদ (১৯)। তিনি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের প্রবাসী আবুল কালামের ছেলে।

খবর পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জোনায়েদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে সন্ধ্যার দিকে ওই তরুণের কক্ষে গিয়ে তাঁর নিথর দেহ ঝুলে থাকতে দেখেন তাঁর মা। তিনি ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে ওই তরুণকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামান। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে সাব্বিরকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এসএসসি পাস করা জোনায়েদের কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে জোনায়েদ সবার ছোট। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে চলে এসেছেন তাঁর বাবা আবুল কালাম। আজ বিকেল পাঁচটার দিকে ময়নাতদন্তের পর ওই তরুণের লাশ দাফন করা হয়েছে।

জোনায়েদের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকালে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান জোনায়েদের মা। ঘরে কেউ না থাকায় সন্ধ্যার দিকে গলায় রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। সন্ধ্যার পর তাঁর মা ঘরে এসে দেখেন তাঁর ছেলে রশিতে ঝুলছে।

আজ বুধবার সকালে জোনায়েদের পড়ার টেবিলে তাঁর হাতের লেখা একটি চিরকুট পেয়েছেন স্বজনেরা। স্বজনদের ধারণা, প্রেমঘটিত কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। চিরকুটে জোনায়েদ মা, বড় বোন, বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষীদের দোয়া চেয়েছেন এবং তাঁদের শুভকামনা জানিয়েছেন। চিরকুটের এক জায়গায় লেখা, ‘আম্মু, আপনিও ভালো থাইকেন। আপনি আপনার যে ধনটাকে নিয়ে দুনিয়া করতেন, দুভার্গ্যবশত কোনো একটা কারণে তার আর দুনিয়াটা ভাল লাগতেছে না। আপনার ধনটার জন্য কান্নাকাটি না করে মন খুলে দোয়া করিয়েন, যেন আল্লাহ জান্নাত দেয়।’

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা।