বদরগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ডাকঘরের কার্যক্রম

দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে বদরগঞ্জ ডাকঘরের ভবন। গত বৃহস্পতিবার তোলা
ছবি: প্রথম আলো

পুরো ভবনটি জরাজীর্ণ, স্যাঁতসেঁতে। ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। তবু ভবনের ভেতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থা রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর ভবনের।

অন্তত ২০ বছর আগে ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বর্তমানে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

১৯৮৮ সালে উপজেলা ডাকঘর ভবন নির্মিত হয়। ২০০২ সালের দিকে ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়া শুরু হয়। ক্রমেই পুরো ভবন স্যাঁতসেঁতে ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। তবু প্রতিদিন ওই ভবনের ভেতরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিঠি আদান-প্রদান, টাকা লেনদেনসহ যাবতীয় সেবামূলক কাজ করছেন কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষও সেবা নিতে ভবনের ভেতরে গিয়ে ভয়ে থাকেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা ডাকঘরে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের সামনের জরাজীর্ণ পাকা সীমানাপ্রাচীর ধসে পড়েছে। ছাদের পলেস্তারা খসে রড বেরিয়ে পড়েছে। শেওলা জমে থাকা স্যাঁতসেঁতে ভবনে ভয় ও আতঙ্ক নিয়ে কাজ করছেন কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁদের অভিযোগ, যেকোনো মুহূর্তে ভবনটি ধসে পড়তে পারে। এতে তাঁরা কেউ বাঁচবেন না।

ওই ডাকঘরের সাবেক পোস্টমাস্টার খোরশেদ আলম জানান, ১৯৮১ সালে তিনি ওই ডাকঘরে যোগদান করেন। তখন ডাকঘরটি ছিল টিনশেডের। ১৯৮৮ সালে সেখানে ভবন নির্মিত হয়। ২০০২ সালের দিকে ভবনটি কিছুটা জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। বর্তমানে ভবনের ভঙ্গুর অবস্থা। যেকোনো সময় ভবন ধসে পড়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে।

ওই ডাকঘরে সেবা নিতে আসা আমিনুল ইসলাম ছাদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ভবনের ভেতরে ঢুকে ভয় লাগছে। কখন যে এটা ধসে পড়বে বলা মুশকিল।

ভবনের ভেতরে কাজ করা পোস্টাল অপারেটর মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ভবনে ঢোকার আগে আল্লাহকে স্মরণ করি। কাজের মধ্যে ডুবে থেকেও মাথার ওপরে ছাদের দিকে তাকাই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ শেষে বের হতে পারলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। চাকরি করি। করারও কিছু নেই।’

ডাকপিয়ন আফছার আহম্মেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ। এখন আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। অফিস চলাকালে ভবন ধসে পড়লে কেউ বাঁচতে পারবেন না।

উপজেলা পোস্ট অফিসের পোস্ট ই-সেন্টার ট্রেইনার মোকাদ্দেস মণ্ডল বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে এখানে কাজ করছি। কাজ করার সময় ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। একদিন অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। মাথার পাশে টেবিলের ওপরে ছাদ থেকে পলেস্তারার বড় একটি অংশ খসে পড়েছিল।’

উপজেলা পোস্টমাস্টার ইউনুছ আলী বলেন, তিনি পাঁচ মাস আগে এখানে যোগ দিয়েছেন। ভবন জরাজীর্ণ হলেও তাঁদের কাজ করতে হয়। সম্প্রতি একজন ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল ভবনটি দেখে গেছেন। আশা করা যায় ব্যবস্থা একটা হবে।