কুষ্টিয়ায় মোটরসাইকেল পোড়ানোর মামলায় যুবলীগ নেতার ছেলে গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে কুষ্টিয়ায় সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা যুবলীগের এক নেতার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার তরুণের নাম আশফাক উজ জামান সৌরভ (১৮)। তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের মিনাপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ওরফে পাশার ছেলে। আনোয়ার হোসেন ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।

১৭ জুলাই বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস ফুলতলা এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তিন দফায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের ফেলে যাওয়া সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন এক দল লোক। এ ঘটনায় ১৮ জুলাই রোহাজ আরেফিন ওরফে রাব্বি (২৪) নামের এক তরুণ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে বাড়ি থেকে সৌরভকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ১৭ জুলাই কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় সৌরভ জড়িত। ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্তের পর গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা থেকে গতকাল শুক্রবার ওই ছেলেকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। একই দিন বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

যোগাযোগ করা হলে সৌরভের বাবা যুবলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলে সৌরভ কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলার একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে কুষ্টিয়া ডিবি পুলিশ তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। পুলিশের অভিযোগ, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতার ঘটনায় নাকি ছেলে জড়িত। ফুটেজ দেখে তারা শনাক্ত করেছে।

আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। সে আমার কাছে স্বীকার করেছে, মেসের বড় ভাইয়েরা তাকে আন্দোলনে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য করেছিল। মেসের এক বড় ভাই গ্রেপ্তার হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যেই পুলিশ ধরেছে। হয়তো জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেবে।’

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সৌরভ ছাড়াও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন মেহেদী হাসান ওরফে জিকু (২৬) নামের এক তরুণ। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমানের ছেলে।