মাদারীপুরে তরুণী শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় ১৪ বছর পর শহীদুল মোল্লা নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেল জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে এক তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যার ১৪ বছর পর এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শহীদুল মোল্লা (৪২) সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণদী এলাকার বাসিন্দা।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, শহীদুল মোল্লার সঙ্গে সদর উপজেলার এক তরুণীর প্রেম ছিল। ২০০৮ সালের ৬ মে সকালে ওই তরুণী শহীদুল মোল্লার সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ ধুয়াসার এলাকার একটি পেঁপেবাগান থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার করে কালকিনি থানার পুলিশ। নিহত তরুণীর ভাই ওই দিন বিকেলে শহীদুল মোল্লা ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে কালকিনি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালকিনি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ ২০০৯ সালের ২২ জুন শহীদুল মোল্লাকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। পরে বিচারিক আদালতে দীর্ঘ ১৪ বছর যুক্তিতর্ক শেষে আজ শহীদুল মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

রায়ের পর মামলার বাদী নিহত তরুণীর ভাই বলেন, ‘১৪ বছর পর আমার বোনকে হত্যার রায় হয়েছে। এ রায়ে আমরা খুশি। এ রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে এবং দ্রুত কার্যকর করা হয়, সে দাবি জানাই।’

মাদারীপুর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আসামি শহীদুল মোল্লা প্রতারণার মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বিয়ে করেনি। পরে ওই তরুণীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছি, শহীদুল মোল্লা তার প্রেমিকাকে হত্যা করেছে। আদালতের এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করছি, উচ্চ আদালত থেকে অভিযুক্ত আসামি শহীদুল মোল্লা খালাস পাবেন।’

আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রায় সাড়ে ১১ বছর পলাতক ছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর বিচারিক কাজ শুরু হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।