চাঁদাবাজির কারণে মানুষ অতিষ্ঠ, ভয়ে নাম বলতে পারে না: এ কে আজাদ

ফরিদপুরে হাইওয়ে পুলিশ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার মাল্টিপারপাস মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

চাঁদাবাজির কারণে মানুষ অতিষ্ঠ, অনেকে ভয়ে নাম বলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। ফরিদপুরে হাইওয়ে পুলিশ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার মাল্টিপারপাস মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হাইওয়ে পুলিশ মাদারীপুর অঞ্চল।

এ কে আজাদ বলেন, ‘প্রত্যেকটা সংগঠনের নেতারা এখানে আছেন। আমি তাঁদের অনুরোধ করছি, অবৈধভাবে যেন কোনো চাঁদাবাজি না হয়। এটা জনগণের কাছে আমার একটা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। অবৈধ চাঁদাবাজি হলে আপনাদের (পুলিশ) কাছে অনুরোধ করছি, ওসি সাহেব এখানে আছেন, আপনি তদন্ত করে মামলা নেবেন। এই চাঁদাবাজির কারণে মানুষ অতিষ্ঠ, অনেকে ভয়ে নাম বলতে পারে না।’

এ কে আজাদ বলেন, ‘ওসি সাহেব আপনার প্রশাসনের ব্যাপারে আপনি তদন্ত ছাড়া কোনো মামলা নেবেন না। যে–ই অভিযোগ করুক। আগে তদন্ত করবেন। তদন্ত করে দায়ী হলে মামলা নেবেন। প্রত্যেকটা সংগঠনের কাছে আমার অনুরোধ, কোনোভাবেই যেন এই শহরে কোনো চাঁদাবাজি না হয়। আমরা যেন আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিই।’ তিনি বলেন, ‘আমি অন্তত বলতে পারি, আমি কোনো দোষী ব্যক্তির পক্ষে তদবির করব না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কয়েকটা নীতিগত ব্যাপারে আমি কখনো কম্প্রোমাইজ করব না। তাতে আগামী দিনে আমাকে ভোট দিল, না দিল তা আমার ব্যাপার না।’

সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এ কে আজাদ বলেন, ‘সাংবাদিক বন্ধুরা, যেকোনো সংবাদ, এমনকি আমার বিরুদ্ধে লিখতেও দ্বিধা করবেন না। আমার ভালোটাও যেভাবে তুলে ধরবেন, আমার খারাপটাও তুলে ধরবেন। স্মার্ট ফরিদপুর গড়তে হলে সাংবাদিক, স্থানীয় নেতা ও পুলিশ প্রশাসনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগবে।’ তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ যাঁরা ফরিদপুরে এসে কাজ করছেন, তাঁরা কেউ জেলার বাসিন্দা নন। কাজ শেষে আবার চলে যাবেন। স্মার্ট ফরিদপুর গড়তে হলে সাংবাদিক, পুলিশ, প্রশাসনসহ সবাইকে একত্র হয়ে কাজ করতে হবে। এ জন্য সবার রাজনৈতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। সবার সহযোগিতায় সুখী-সমৃদ্ধ, মাদক-সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত ফরিদপুর গড়া সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে ‘ই-ট্রাফিক জরিমানা কালেকশন’ প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক মোল্লা, জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান, জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি খন্দকার আবদুর রাশেদ, জেলা মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি বজলুর রশিদ ও ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি জুবায়ের জাকির।

আলোচনা সভা শেষে মঞ্চে ‘ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন সড়কে চলাচল করাই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ’ শিরোনামে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের দুটি দল অংশ নেয়। এতে পাংশা সরকারি কলেজ জয়ী হয়।