‘তুই পুলিশ দিয়া ধরাইছছ’ বলে ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছনা, অভিযুক্ত যুবক পলাতক

অপরাধপ্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ‘গরু চোর’ সন্দেহে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার জেরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগকারী ব্যক্তির নাম লাচনা নাইডু (৫৫)। তিনি উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ধামাই চা–বাগান এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সুমন মিয়া (৩০)। তিনি ভবানীগঞ্জ বাজারের কলেজ সড়ক এলাকার বাসিন্দা ও লোহার গ্রিল তৈরির দোকানে শ্রমিকের কাজ করেন।

লাচনা নাইডু ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, একই ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনীন্দ্র রুদ্রপালকে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে গতকাল সকালে উপজেলা সদরে যান লাচনা। কাজ শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা ভবানীগঞ্জ বাজারের চৌমোহনা এলাকায় একটি রেস্তোরাঁয় বসে নাশতা করছিলেন। এ সময় সুমন সেখানে ঢুকে লাচনাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। একপর্যায়ে ‘তুই পুলিশ দিয়া ধরাইছছ’ বলে লাচনাকে শার্টের কলার ধরে বাইরে নিয়ে যান। মনীন্দ্র এতে বাধা দিলেও সুমন মানেননি। পরে সড়কের পাশে নিয়ে লাচনাকে জুতাপেটা শুরু করেন সুমন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন সুমনকে থামান।

এ বিষয়ে লাচনা নাইডুর ভাষ্য, প্রায় তিন মাস আগে রাতে তাঁর এলাকার একটি বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। এ সময় ‘গরু চোর’ সন্দেহে সুমন মিয়াকে আটক করে বেঁধে রাখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে তিনি সেখানে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে সুমনকে থানায় নিয়ে যায়। পরদিন জানতে পারেন, সুমনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়ার জেরেই সুমন গতকাল তাঁর ওপর হামলা চালান। এ ব্যাপারে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দেবেন।

ইউপি সদস্য লাচনা নাইডুর ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে পশ্চিম জুড়ী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হামলাকারী ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। সুমন কীভাবে সেদিন থানা থেকে ছাড়া পেলেন, সে বিষয়ে কিছু জানেন না তাঁরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুমনের বাড়ি গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। সেখানে তাঁর এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা হলে সুমনের মুঠোফোনের নম্বর নেই বলে জানান।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জানান, ইউপি সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুমন কীভাবে ছাড়া পেলেন, তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।