সরকার অলিগার্ক তৈরি করে গরিবের সম্পদ লুট করছে: আবদুল মঈন খান

কারাবন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া বিএনপির নেতা আসাদুজ্জামান হীরার বাড়িতে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন আবদুল মঈন খান। রোববার দুপুরে শ্রীপুরের ধামলই গ্রামেছবি: প্রথম আলো

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘আজকে এই সরকার গণতন্ত্রের পরিবর্তে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে। অর্থনীতির দিক থেকে দেশে কিছু অলিগার্ক তৈরি করেছে। অলিগার্কির মাধ্যমে গরিব মানুষের ধন-সম্পদ লুট করছে। লক্ষ-হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। দেশের সব ব্যবসা-বাণিজ্যকে কুক্ষিগত করে নিয়েছে।’

কারাবন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া গাজীপুরের শ্রীপুরের বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান হীরা খানের (৫০) স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আজ রোববার দুপুরে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান মঈন খান। তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে আসাদুজ্জামানের কবর জিয়ারত করেন। পরে তাঁর স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি ঈদের শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন।

আবদুল মঈন খানের সঙ্গে বিএনপির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (বাচ্চু), শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুল আলম মাস্টার, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান খান (টিটু) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত বছরের ১ ডিসেম্বর গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান হীরা খান মারা যান। তিনি শ্রীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের বলদিঘাট গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। ওই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেলের মধ্যে দুঃসহ নির্যাতনের কারণে আমাদের হীরা সাহেব মারা গেছেন। গ্রামেগঞ্জে আমাদের প্রত্যেক নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের তারেক রহমান খোঁজখবর নিচ্ছেন। সহানুভূতি জানাচ্ছেন। তাঁর পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা ও দলীয় চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে ছোট উপহার পৌঁছে দিয়েছি।’

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি রাজনীতি করে না। আমরা চাই দেশের মানুষের অধিকার ফিরে আসুক। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে আসুক, মানবাধিকার ফিরে আসুক। আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছরে একটি ধনী শ্রেণির সৃষ্টি করেছে। সেই ধনী শ্রেণি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের সব ব্যবসা-বাণিজ্য কুক্ষিগত করে নিয়েছে।’

আবদুল মঈন খান আরও বলেন, ‘এই সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে। এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে বের করে একটি জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাহলেই শুধু শ্রমিকের সমস্যা, দরিদ্র মানুষের সমস্যা, নারীর সমস্যা, গণতন্ত্রের সমস্যা, ভোটের সমস্যাসহ সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারকে বিদায় হতে বাধ্য করব। সরকার ক্ষমতায় আছে বন্দুকের জোরে, বুলেটের জোরে, গ্রেনেডের জুড়ে। বিএনপি জনগণের শক্তিতে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করবে।’

গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে আটক হন বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান হীরা। পরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। এরপর ১০ নভেম্বর তাঁকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বন্দী থাকা অবস্থায় ১ ডিসেম্বর সকালে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে তিনি মারা যান।