‘সাত্তারকে বিজয়ী করা আ.লীগের রাজনৈতিক দায়িত্ব’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষে আলোচনা ও পরামর্শ সভায় আওয়ামী লীগের নেতারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরাইলের সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে বিজয়ী করা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরাইলে আবদুস সাত্তারের সমর্থনে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও পরামর্শ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বেলা সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত উপজেলার সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত সভা আহ্বান করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আল মামুন সরকার।

আরও পড়ুন

আল মামুন সরকার বলেন, ‘ভোটারদের কেন্দ্রে আনার দায়িত্ব মেম্বার-চেয়ারম্যানদের। কলার ছড়ি (কলার ছড়া মার্কা) প্রতীকে ভোট নেওয়ার দায়িত্ব আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের। যাঁরা সরকারের বিভিন্ন সুবিধা পান, তাঁরা কিন্তু মেম্বারদের লাইনে আছেন। আমরা এ কথা এখানে বলতে এসেছি যে আপনারা যাঁরা বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বার আছেন, আল্লাহর ওয়াস্তে তাঁরা ১ ফেব্রুয়ারি আপনার ওয়ার্ডের ভোটারদের কেন্দ্রে হাজির করবেন। প্রত্যেক সদস্য-সদস্যা ভোটার নিয়ে কেন্দ্রে হাজির হবেন। আর ইউপি চেয়ারম্যানরা তাঁর ইউনিয়নের প্রতিটি সেন্টারে ভোটারদের হাজির করার ব্যবস্থা করবেন।’

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেহেতু এখানে আমাদের দলীয় প্রার্থী নেই, তাই একজন ভালো মানুষ ও পাঁচবারের সংসদ সদস্য হিসেবে প্রবীণ নেতা হিসেবে আবদুস সাত্তার সাহেবকে আমরা রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করি। সে কারণে সাত্তার সাহেবকে বিজয়ী করানো আমাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব। কে কী বলল, কোন নেতা কারে দাওয়াত করল, কারে দাওয়াত করল না, এসব ভাবার দরকার নাই। নেত্রীর নির্দেশ পালন ও বাস্তবায়ন করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আপনারা যারা বক্তব্য দেবেন, শুধু একটা কথাই ভালো করে বলবেন, ভোটারদের কিভাবে সেন্টারে আনবেন।’

আরও পড়ুন

আল মামুন সরকার আরও বলেন, ‘২৭ থেকে ৩০ জানুয়ারি—চার দিন কাজ করার দিন। ৩০ জানুয়ারি বিকেল থেকে কোনো প্রচারণার কাজ করা যাবে না। ১ ফেব্রুয়ারি ভোট। যাঁরা ইউনিয়নের মেম্বার আছেন, তাঁরা ভোট সেন্টারের মালিক। প্রতিটি সেন্টার মেম্বারের বাড়ির পাশে বা তাঁদের গোষ্ঠীর লোকজনের পাশে। আমাদের এই সরকার চেয়ারম্যান-মেম্বারের মাধ্যমে জনগণকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ নানা ধরনের সুবিধা দিয়েছেন। সরকারের বিভিন্ন উপকারভোগী মানুষসহ প্রতিটি ওয়ার্ডের ভোটারদের কেন্দ্রে হাজির করবেন।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে আমাদের যাঁরা স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন, তাঁরা ভোটারদের কলার ছড়া মার্কায় ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করবেন। এই নির্বাচন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য চ্যালেঞ্জ। আমরা সবাই চাই, শেখ হাসিনার সুনাম অক্ষুণ্ন থাকুক। উকিল আবদুস সাত্তারকে সমর্থন দিয়ে শেখ হাসিনা যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, সেই চ্যালেঞ্জে আমরা জয়লাভ করতে চাই। ১ ফেব্রুয়ারি আবদুস সাত্তারকে বিপুল ভোটে জয়ী করে শেখ হাসিনাকে উপহার হিসেবে দিতে চাই। সংসদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ থেকে একজন যোগ্য প্রতিনিধি পাঠাতে চাই।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরাইলের সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম মিলনায়তনে ছবি: প্রথম আলো
ছবি: প্রথম আলো

রফিক উদ্দিন ঠাকুরের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির দলছুট নেতা আবদুস সাত্তার, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, উপনির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করা স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হোসেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকেয়া বেগম, উপজেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আসমা আক্তার, শাহবাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল হুদা চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবদুল জব্বার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ আলী, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফ উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শের আলম মিয়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ঠাকুর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।