ট্রেনে শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় রেলের তিন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত

ট্রেন
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ফেরা শিক্ষার্থীদের নাজেহাল ও মারধরের ঘটনায় রেলওয়ের তিনি কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনার তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া রেলওয়ের তিনকর্মী হলেন লাকসামের ভারপ্রাপ্ত জুনিয়র রেলওয়ে ইন্সপেক্টর (জেআরআই) মো. আমিনুল ইসলাম, টিটি আমিন ভূঁইয়া ও টিটি মুকন্দ লাল শিকারী।

জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে ট্রেনে ভর্তি–ইচ্ছুক অন্তত ১০ শিক্ষার্থীর সঙ্গে ওই ট্রেনের টিটিদের টিকিট নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের নাজেহাল ও মারধর করেন ট্রেনের টিটি ও আনসার সদস্যরা। সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশনে ট্রেনটি এলে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের নামানো হয়। তখন অন্য শিক্ষার্থীরা ট্রেন অবরোধ করে লাকসাম জংশনে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা ট্রেনের সামনে রেললাইনে শুয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করেন। রাত ৯টা ১৫ মিনিটে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এটি বিরতিহীন ট্রেন ছিল। লাকসামের ভারপ্রাপ্ত জুনিয়র রেলওয়ে ইন্সপেক্টর (জেআরআই) মো. আমিনুল ইসলাম আমাদের জোর করে লাকসাম জংশনে নামান। তিনি চট্টগ্রাম থেকে লাকসাম পর্যন্ত পুরো পথে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। ট্রেন তো লাকসামে থামার কথা নয়। আমরা অপরাধ করলে ঢাকায় গন্তব্যের শেষ স্টেশনে নিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করত। কিন্তু আমিনুল ইসলাম পুরো পথেই আমাদের এক প্রকার জিম্মি করে রাখেন। তিনি রেলওয়ের আইন ভঙ্গ করেছেন।

চট্টগ্রাম রেলওয়ের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘সোনার বাংলা ট্রেনে বিপুলসংখ্যক যাত্রী টিকিট ছাড়া উঠেন। টিটি টিকিট চেক করতে গেলেই জটিলতা দেখা দেয়। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তিন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা গতকাল রাতেই দেই। শিক্ষার্থীরা তাঁদের বরখাস্তের দাবি তুলেছিলেন। ট্রেনের শত শত যাত্রীর ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এখন আমরা তদন্ত করব। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’