সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বেড়ে ২০ গ্রাম প্লাবিত

রোববার সকাল থেকে ঝালকাঠিতে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঝালকাঠি শহরের পৌরসভা খেয়াঘাটের সুগন্ধা নদীর পাড়ে
ছবি: প্রথম আলো

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার সকাল থেকেই ঝালকাঠির আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। থেমে থেমে পড়ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট বেড়েছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। কাঁঠালিয়ায় বিষখালি নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ না থাকায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বিষখালী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেক বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। বিষখালী নদীর পাঁচ কিলোমিটার অংশে বেড়িবাঁধ না থাকায় কাঁঠালিয়া, আউরা, জয়খালী, চিংড়াখালী, বড়কাঁঠালিয়া, আওরাবুনিয়া, রগুয়ারচরসহ কমপক্ষে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

রোববার সকাল ১০টা থেকে ঝালকাঠিকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদীপাড়ের সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রচার চালাচ্ছে জেলা তথ্য অফিস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। এতে নদীতীরের মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদীতীরবর্তী আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা গবাদিপশু ও আসবাব সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আরও পানি বাড়তে পারে বলে স্থানীয় লোকজন ধারণা করছেন।

জেলার বিভিন্ন স্থানে নদীতে পানি বেড়ে বেড়িবাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে। তলিয়ে গেছে নদীতীরবর্তী জনপদের রাস্তাঘাট ও ফসলের খেত। কাঁঠালিয়ার জয়খালী এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘূর্ণিঝড় শুনলেই আতঙ্কে থাকি। রিমালের নাম শুনেছি। এখন দেখি নদীর পানিও বাড়ছে। পানি যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে আর যদি দেড় থেকে দুই ফুট বাড়ে, তাহলে বাড়িঘরে পানি ঢোকা শুরু করবে।’

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, পূর্ণিমার জোয়ার ও ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।

জেলা প্রশাসক ফারহা গুল নিঝুম জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় ঝালকাঠিতে ৮৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৬২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তুত রয়েছে ৩৭টি চিকিৎসাদল, ফায়ার সার্ভিসের ৮টি উদ্ধারকারী দল। পাশাপাশি শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ৪২৪ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ছয়টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।