ঝালকাঠিতে সুগন্ধার ভাঙনে হুমকিতে মহাসড়ক

এক বছরে নদীভাঙনে মল্লিকপুর জামে মসজিদ ও পৌর এলাকার ভূট্টো বাজারের আংশিক বিলীন হয়েছে। এই সময় শতাধিক বসতভিটা বিলীন হয়েছে।

ঝালকাঠির নলছিটিতে সুগন্ধা নদীর ভাঙনে মল্লিকপুর গ্রামের কাজীবাড়ি জামে মসজিদের ভবনের একাংশ বিলীন হয়ে গেছে
ছবি: প্রথম আলো

‘সুগন্ধার ভাঙ্গলে (ভাঙনে) গত সাত বছরে মুই (আমি) তিন ফির (বার) বসতভিটা পাল্ডাইছি (পাল্টানো)। জোমাজমি (অর্থসম্পদ) হগোল (সব) শ্যাষ করছি। ঘনঘন (বারবার) বাড়ি ছাড়ি কিন্তু নদী ভাঙ্গল মোগো পিছু ছাড়ে না। এইডা এহন মোগো জীবনের লগে মিইশ্যা (মিশে) গ্যাছে।’

গতকাল মঙ্গলবার কথাগুলো বলছিলেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের সুগন্ধা নদীর তীরের বাসিন্দা কৃষক রহমান হাওলাদার (৫২)। রহমান হাওলাদারের মতো একই গ্রামের সৈয়দ আলীসহ (৬০) আরও অনেক পরিবার সুগন্ধা নদীর ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সৈয়দ আলী বলেন, ‘আমার বসতবাড়িসহ পাঁচ একর ফসলি জমি সুগন্ধা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এমনকি বাপ–দাদার কবরও নদীগর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে আমি চাচতো ভাইয়ের জমিতে ঘর তুলে থাকি।’

ঝালকাঠির নলছিটিতে সুগন্ধা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ১০ গ্রামের মানুষের বসতঘর ও বরিশাল–নলছিটি আঞ্চলিক মহাসড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। দফায় দফায় বাড়ির স্থান পরিবর্তন করেও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা মিলছে না তাঁদের। চলমান বর্ষা মৌসুমে নদী পারের মানুষের দিনরাত ভাঙনের আতঙ্কে কাটে।

সরেজমিনে গত রোববার দুপুরে উপজেলার বহরমপুর, সরই ও কাঠিপাড়া এলাকার নদীভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীভাঙনে বসত ভিটাসহ ফসলি জমি নদীর পাড়ে চলে এসেছে। অনেক বসতঘর নদী থেকে ২০ গজের কাছাকাছি দেখা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঝালকাঠি কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় বলেন, ‘নদীর ভাঙন ঠেকাতে প্রথম পর্যায়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।