আন্দোলনের মুখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগ

আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রক্টরের সাময়িক দায়িত্ব পেয়েছেন পরিসংখ্যান ও উপাত্তবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলমগীর কবীর। আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

অফিস আদেশ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের লিখিত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে তাঁকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উপাত্তবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে আজ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি প্রচলিত নিয়মে সুবিধাদি ভোগ করবেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে হলসংলগ্ন জঙ্গলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত ও সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে, নিপীড়কদের সহায়তাকারী হিসেবে অভিযুক্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলমের অপরাধ তদন্ত এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রশাসনিক পদ থেকে তাঁদের অব্যাহতিসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’।

দাবির পক্ষে ১১ মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। তিন দিন অবরোধের পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই আলোচনায় উপাচার্য আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেন ১৭ মার্চের মধ্যে প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলম পদত্যাগ করবেন। যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে ১৮ মার্চ তাঁদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান আজ পদত্যাগ করলেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বিভিন্ন সময়ে নানা অপরাধ ধামাচাপা দিয়ে অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব তিনি যথাযথভাবে পালন করেননি।