মুন্সিগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিন আসামি দুই দিনের রিমান্ডে

মুন্সিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এখানে আজ সকালে পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদার হত্যা মামলার তিন আসামির রিমান্ড শুনানি হয়
ছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার সকালে ওই তিন আসামির সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে মুন্সিগঞ্জ আমলি আদালত-৪-এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরান শুনানি শেষে আসামিদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গিবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল-মামুন রিমান্ড শুনানিতে অংশগ্রহণ শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই তিন আসামি হলেন কাওসার হালদার (৪৫), শেকেনুর হালদার (৪৮) ও নুর হোসেন (৪০)।

আরও পড়ুন

নিহত সুমন হালদার পাঁচগাও ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের প্রয়াত পিয়ার হোসেন হালদারের ছেলে। তিনি ২০২৩ সালের মার্চে পাঁচগাও ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।

মামলার এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, গত রোববার সকাল ১০টার দিকে পাঁচগাঁও ওয়াহেদ আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন চলছিল। নির্বাচনে ওই কমিটির সভাপতি পদে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ওয়াহেদ আলীর ছেলে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা দেওয়ান মনিরুজ্জামান এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিলেনুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে মনিরুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদার। আর মিলেনুরের পক্ষে ছিলেন নূর মোহাম্মদ, তাঁর ভাই নূর আহমেদ ও নুর হোসেন এবং কাওসার হালদার ও শেকেনুর হালদারের গোষ্ঠীর লোকজন।

দুপুরে ভোট গণনা শেষে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, মনিরুজ্জামান ৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এতে ক্ষিপ্ত হন পরাজিত প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা। বেলা পৌনে একটার দিকে বিদ্যালয়ের মাঠে ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদারকে নূর মোহাম্মদ ও নূর আহমেদ প্রকাশ্যে বুকে গুলি করে পালিয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা গুলিবিদ্ধ সুমনকে দ্রুত উদ্ধার করে টঙ্গিবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে কাওসার হালদার, শেকেনুর হালদার ও নুর হোসেনকে আটক করে পুলিশ।

ঘটনার পরের দিন নিহত সুমন হালদারের ছোট ভাই ইমন হালদার বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও দু-তিনজনকে আসামি করে টঙ্গিবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আল মামুন জানান, গ্রেপ্তার তিন আসামির সাত দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। আদালত রিমান্ড শুনানি শেষে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এখনো ওই মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।