বৈষম্যবিরোধী সংগঠকের ওপর হামলা: বিএনপি নেতার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন অভিযুক্ত

এক সংগঠককে মারধর ও হামলার প্রতিবাদে ফরিদপুরের নগরকান্দায় সড়ক অবরোধ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। গত শুক্রবার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভবুকদিয়া এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া গ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলামের (১৮) ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির এক নেতার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযুক্ত একজন। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে সাগর কাজী নামের ওই ব্যক্তি এ অভিযোগ করেন।

বৈশাখীর অভিযোগ, গত শুক্রবার বিকেলে তাঁকে চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন ডাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ইসকান্দার কাজী, তাঁর ছেলে সাগর কাজী, ফয়সালসহ আরও কয়েকজন।

তবে সাগর কাজী ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করেন, ‘সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে এখানে রাজনীতি করছেন বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান। তিনি এটি রাজনৈতিক ইস্যু করে ফেলছেন।’ হামলার দিন ঘটনাস্থলে ওই বিএনপি নেতা নিজেও উপস্থিত ছিলেন বলে তাঁর দাবি।

আরও পড়ুন

নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বদিউজ্জামান ওরফে তারা মোল্লার প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে সাগর কাজী বলেন, ‘যখন আপনার সঙ্গে ব্যানার করলাম তখন চিনলেন, বিপদে পড়ছি এখন চেনেন না। আমার ওপরে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন কেন?’
সাগর কাজীর ভাষ্য, ‘বদিউজ্জামান বলেছেন, বিএনপির কোনো লোক সেদিন ওখানে ছিল না। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে, ওখানে যাঁরা ছিলেন তাঁরা বিএনপির সমর্থক, এমনকি বদিউজ্জামানের ভাই দুদু মোল্লাও ঘটনাস্থলে ছিলেন।’

অজ্ঞাত স্থান থেকে ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন হামলায় অভিযুক্ত সাগর কাজী
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সাগর কাজী বলেন, ‘আমি আর আব্বু নাকি পিটাইছি, একটা মানুষকে যদি ২০-২৫ মিনিট পেটানো হয়, তাহলে তাঁর এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকা উচিত। আমাদের পরিবারের ব্যাকগ্রাউন্ড নষ্ট করার জন্য মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমার বাড়িতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‍্যাব আসতেছে। আমার খাওয়াদাওয়া, ঘুম—সব হারাম হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাগর আমার লোক না, তিনি যুবলীগ নেতা ফরহাদের লোক। ওরা এখনো চাচ্ছে যে বিএনপিকে কীভাবে হেনস্তা করা যায়। সাগরকে আমি চিনি না। আমার দল করলে অবশ্যই চিনতাম। ওদের আমার দলে মিশিয়ে তো আমি দল থেকে বহিষ্কার হতে চাই না।’

আরও পড়ুন

এদিকে ঘটনার দিন রাতে ছোট বোনকে উত্ত্যক্ত করার বিচার চাইতে গিয়ে হামলার শিকার হন বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলাম দাবি করেন। পরদিন স্থানীয় বিএনপি নেতারা বৈশাখীর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘ঘটনা ঘটিয়েছে সুবিধাবাদী দল। তারা আওয়ামী লীগের সময় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ঘুরত। এখন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় তারা বিএনপি করে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তাদের ছবি আছে।’

হামলার পর ওই দিন রাত ১০টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধসহ এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নগরকান্দা সার্কেলের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি করেছেন বৈশাখী ইসলাম এবং একটি পুলিশ বাদী হয়ে করেছে। এ পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন