আওয়ামী লীগ নেতার কার্যালয়ে ‘মারধরে’ সেই কলেজছাত্র কানে শুনছেন না

রাজশাহী জেলার মানচিত্র

রাজশাহীর পবা উপজেলায় বিয়ের জন্য তুলে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতার কার্যালয়ে আটকে মারধর করা কলেজছাত্র ঠিকমতো কানে শুনতে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁকে গত মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর ডান কানের ওপরে চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

তাইজুল ইসলাম নামের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, রাজশাহীর কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সামার লোকজনের মারধরের কারণে তাঁর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা আছে। ডান কানে কম শুনতে পাচ্ছেন। এই কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন। কয়েক দিন ওষুধ খেয়ে স্বাভাবিক না হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে। রামেক হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসক সুব্রত ঘোষ তাঁকে চিকিৎসা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে চিকিৎসক সুব্রত ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, তাইজুল বলছেন যে কানে কম শুনছেন। পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা ছাড়া বলা যাবে না।

তাইজুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুল হালিম। তাইজুল রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র।

তাইজুলের বাবা আবদুল হালিমের অভিযোগ, গত সোমবার দুপুরে পরীক্ষা দিতে অটোরিকশায় চড়ে কলেজে যাচ্ছিলেন তাইজুল ইসলাম (২১)। কাটাখালী বাজারে আবু সামা তাঁর লোকজন দিয়ে তাইজুলকে অটোরিকশা থেকে জোর করে নামিয়ে কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে তাইজুলকে আটকে রাখা হয়। আবু সামা ওই সময় তাইজুলকে বলেন, এক মেয়ের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক আছে। মেয়েটিকে এখনই বিয়ে করতে হবে। তা না হলে তাঁকে ছাড়া হবে না। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তিনি ছাড়া পান।

ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনায় আবদুল হালিম গত বুধবার রাতে আবু সামাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে কাটাখালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। অভিযোগে বলা হয়েছে, কার্যালয়ে আটকে রেখে আবু সামা তাঁর কাছে থাকা পিস্তল ঠেকিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। তবে এখনো মামলা রেকর্ড না করায় সুবিচার পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় তাইজুলের পরিবার।

জানতে চাইলে কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘থানায় একটা এজাহার পেয়েছি। সেটা প্রাথমিক তদন্তের জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তাইজুলকে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার আওয়ামী লীগের নেতা আবু সামা বলেছিলেন, তাইজুলকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে আনা হয়নি। রাস্তার ওপরে তাইজুল এক তরুণীর সঙ্গে ঝামেলা করছিলেন। তাই সমাধানের জন্য অফিসে নেওয়া হয়। টাকা চাওয়ার ঘটনা ঠিক নয়।