স্থানীয় উদ্যোগে নির্মাণ হচ্ছে কাঠের সাঁকো

সাঁকোটির দৈর্ঘ্য হবে ২০০ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ৫ ফুট। পাঁচ গ্রামের প্রায় ১৩ হাজার মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।

কাঠ দিয়ে ঘাঘট নদের ওপর স্থানীয় উদ্যোগে সাঁকো তৈরি করছেন এলাকাবাসী। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কুঠিরঘাটেছবি: প্রথম আলো

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আলমবিদিতর ইউনিয়নে ঘাঘট নদের কুঠিরঘাটে স্থানীয় উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে কাঠের সাঁকো। স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কেউ টাকা দিচ্ছেন, আবার কেউ স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ করছেন। সাঁকোটি নির্মাণ হলে পাঁচ গ্রামের প্রায় ১৩ হাজার মানুষের ভোগান্তি দূর হবে। ঈদের আগেই সাঁকোটি চালু করার চেষ্টা চলছে।

সাঁকোটির দৈর্ঘ্য হবে ২০০ ফুট ও প্রস্থ সাড়ে ৫ ফুট। সাঁকোর দুই পাড়ের এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে সয়রাবাড়ি, কাছারিপাড়া, নগর বড়াইবাড়ি, বকশিগঞ্জ ও ডাংরির পাড়া।

গতকাল শনিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, ঘাঘট নদের মধ্যে আড়াআড়ি চারটি স্থানে সিমেন্টের পিলার বসানো হয়েছে। পিলারের ওপর দিয়ে কাঠের কাজ করছেন শ্রমিকেরা। কাঠের পাটাতন বিছানো হয়ে গেলে এই সাঁকো দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারবেন।

উপায় না পেয়ে এলাকার মানুষ টাকা তুলে সাঁকো নির্মাণ করছেন। আশা করা যাচ্ছে ঈদের আগেই হেঁটে চলাচল করা সম্ভব হবে।
নূর মোহাম্মদ, সাাঁকো নির্মাণের উদ্যোক্তা

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিলের শুরুতে নদের ভেতর সিমেন্টের বোল্ডারের খুঁটি বসানো হয়। নদের দুই পাড়ের মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় কাঠের সাঁকোটি নির্মাণকাজ চলছে। এখানে আগে ছিল বাঁশের সাঁকো। সেটি বেশি দিন টেকেনি। বারবার নষ্ট হয়ে যায়। সেই বাঁশের সাঁকোর পেছনে দুই পাড়ের মানুষের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এর আগে এখানে খেয়ানৌকা ছিল। নতুন সাঁকো নির্মিত হলে এর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে।

সাঁকো নির্মাণের উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন নগর বড়াইবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি সিমেন্টের কংক্রিটের বোল্ডার দিয়েছেন। এগুলো দিয়ে নদীর মধ্যে পিলার করা হয়েছে। এখন এই পিলারের ওপর কাঠের কাজ চলছে। সেতুটি শেষ করতে চার লাখ টাকা কাঠের খরচ পড়বে। এই টাকা এলাকার লোকজন দিয়েছেন। শ্রমিকের কাজও হচ্ছে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। সিমেন্টের পিলারের হিসাব করলে প্রায় ৯ লাখ টাকা খরচ হবে।

সাাঁকো নির্মাণের আরেক উদ্যোক্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, উপজেলা পরিষদে সেতু নির্মাণের জন্য বহুবার ধরনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উপায় না পেয়ে এলাকার মানুষ টাকা তুলে সাঁকো নির্মাণ করছেন। আশা করা যাচ্ছে ঈদের আগেই হেঁটে চলাচল করা সম্ভব হবে।

বকশিগঞ্জ এলাকার কৃষক জব্বার মিয়া বলেন, ‘অনেক আগোত এই কুঠিঘাট পারাপার করতে নৌকাত গেছনো। এলা সেই ঘাট নাই। কিন্তু বর্ষাকালে পানি হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষদের যাওয়া-আসা করতে বাঁশের সাঁকো আছলো, সেটাও ভাঙি গেইছে। ’ আলমবিদিতর ইউপি চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন জানান, ঘাঘট নদের কুঠিরঘাট এই এলাকায় নদভাঙন রোধে সিমেন্টের বোল্ডার ফেলা হয়েছে। এখানে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ একাধিকবার নেওয়া হলেও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেতু নির্মাণ করা যায়নি।