সিলেটে বুধবার থেকে তিন দফা দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

সিএনজি ফিলিং স্টেশন
ফাইল ছবি

সিলেটে তিন দফা দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছে।

পরিবহনশ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলেটের সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের সংকট দূর করা, রাজনৈতিক বিভিন্ন মামলায় আটক শ্রমিকদের মুক্তি এবং ২০২১ সালের চৌহাট্টায় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের করা মামলা প্রত্যাহার করা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধর্মঘট পালনের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিলেটের সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে প্রতি মাসের ২০ থেকে ২২ তারিখ আসার পর গ্যাসের লিমিট শেষ হওয়ার কথা বলে বন্ধ রাখা হয়। এতে পরিবহনশ্রমিকেরা বিপাকে পড়েন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিবহনশ্রমিকদের যানবাহন নিয়ে রাস্তা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এর ফলে পরদিন কাজে যোগ দিতে পারছেন না। এ সমস্যা সমাধানের জন্য একাধিকবার জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপরও এর কোনো সুরাহা হয়নি।

বুধবার সকাল থেকে সিলেট থেকে কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন ছেড়ে যাবে না। এ ছাড়া সিলেটেও কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন প্রবেশ করবে না।

ময়নুল ইসলাম আরও বলেন, ২০২১ সালে সিলেট নগরের চৌহাট্টা স্ট্যান্ড নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। ওই ঘটনা আপস-মীমাংসার পরও মামলা চলমান। সেই মামলার সমাধান চান তাঁরা। অন্য দাবির মধ্যে পরিবহনশ্রমিকদের রাজনৈতিক মামলায় বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেখা গেছে, যে শ্রমিক ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তাঁকেও মামলার আসামি করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর ওই শ্রমিককে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। এসব মামলায় গ্রেপ্তার শ্রমিকদের জামিন চাচ্ছেন তাঁরা।

সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, বুধবার সকাল থেকে সিলেট থেকে কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন ছেড়ে যাবে না। এ ছাড়া সিলেটেও কোনো যাত্রীবাহী যানবাহন প্রবেশ করবে না। দাবিগুলোর বিষয়ে একাধিকবার পরিবহনশ্রমিকদের পক্ষ থেকে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষসহ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এরপরও কোনো সমাধান হয়নি।

আলী আকবর বলেন, সিলেট থেকে গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে, কিন্তু সিলেটের মানুষ এ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশের কোথাও সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনগুলোতে এমন সংকট দেখা যায় না। শুধু সিলেটে এমন সংকট।

আলী আকবর আরও বলেন, গ্যাসের সমস্যা সমাধানের জন্য আজ সন্ধ্যায় সিলেটের জালালাবাদ গ্যাসের ভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিবহনশ্রমিক নেতাদের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকেও কোনো সুরাহা হয়নি। গ্যাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসে রিফুয়েলিং স্টেশনের সংকট দূর করা হবে। তবে আগামী মাসে আবার আগের লিমিটেই চলবে। এমন বক্তব্যের ফলে পরিবহনশ্রমিকেরা বৈঠক থেকে চলে এসেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জালালাবাদ গ্যাস টি অ্যান্ড ডি সিস্টেম লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক মো. আমিরুল ইসলাম পরিবহনশ্রমিকদের দাবির বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জালালাবাদ গ্যাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠকের বিষয়েও তিনি জানেন না।