চাঁদাবাজির মামলায় শ্রমিক লীগের সভাপতি কারাগারে

ডামুড্যা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কামাল চৌকিদার
ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কামাল চৌকিদারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একটি চাঁদাবাজি মামলায় বুধবার বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। চাঁদা না পেয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ডামুড্যা থানায় মামলাটি করেছেন জুলফিকার সরদার নামের এক ব্যক্তি।

ডামুড্যা থানা সূত্র জানায়, কামাল চৌকিদার দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা সদরে বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদা তুলছেন। উপজেলার ছাতিয়াানি গ্রামের জুলফিকার সরদারের ছেলে মোহাম্মদ হাসান চট্টগ্রামে অটোরিকশা চালাতেন। সম্প্রতি তিনি ওই সিএনজি নিয়ে গ্রামে চলে আসেন ডামুড্যা-শরীয়তপুর সড়কে চালানোর জন্য। তখন তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কামাল চৌকিদার। তবে অটোরিকশাচালক হাসান তাঁকে ৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু তাতে রাজি হননি কামাল চৌকিদার। ঘটনাটি নিয়ে হাসানের ওপর ক্ষুব্ধ হন কামাল।

৯ এপ্রিল হাসান অটোরিকশা নিয়ে ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ডে এলে শ্রমিক লীগের নেতা কামাল তা ছিনিয়ে নেন। কামাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগের স্থানীয় বিভিন্ন নেতাদের কাছে ধরনা দিয়েও অটোরিকশা ফেরত পাননি।

বুধবার সকালে হাসানের বাবা জুলফিকার সরদার ডামুড্যা থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। ওই মামলায় কামাল চৌকিদার, তাঁর ভাই রাজা চৌকিদার, তাঁদের সহযোগী সেন্টু কোতোয়ালকে আসামি করা হয়েছে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডামুড্যা উপজেলা চত্বর থেকে অটোরিকশাসহ কামালকে গ্রেপ্তার করে। বিকেলে তাঁকে শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। আদালতের বিচারক তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ঘাম ঝরিয়ে পয়সা রোজগার করে পরিবার নিয়ে জীবন কাটাই। অন্যায়ভাবে আমাদের সেই টাকায় ভাগ বসাতে চেয়েছিলেন প্রভাবশালী কামাল চৌকিদার। তাঁকে অল্প কিছু টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটমাট করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিতে পারায় আমার সিএনজি তিনি ছিনিয়ে নেন।’

শরীয়তপুর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, ডামুড্যা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কালাম চৌকিদারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে এমন শুনেছি। তিনি এ ঘটনায় জড়িত কি না, তা বলতে পারব না। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। তিনি যদি অভিযুক্ত হন, তাহলে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে।

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শরীফুল আলম প্রথম আলোকে বরেন, ‘কালাম চৌকিদারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের মৌখিক অভিযোগ আসছিল। ৯ এপ্রিল তিনি চাঁদা না পেয়ে এক ব্যক্তির অটোরিকশা ছিনিয়ে নেন। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে সত্যতা পাই। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়েছে। কামালের বিরুদ্ধে মাদক, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের আরও ৯টি মামলা রয়েছে।’