মেয়ের বাল্যবিবাহ দেওয়ায় মায়ের ভিজিডি কার্ড বাতিল

বাল্যবিবাহ
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় মেয়ের বাল্যবিবাহ দেওয়ায় এক নারীর ভিজিডি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া দুটি বাল্যবিবাহ আয়োজনের খবর পেয়ে সেগুলো বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করা হয়েছে সম্পন্ন হয়ে যাওয়া দুটি বাল্যবিবাহের ওপর।

আজ সোমবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব সিদ্ধান্ত দেন তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস। নির্দেশনা না মানলে কনের মা–বাবাকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তালা উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নে একই এলাকার একজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ও একজন নবম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা-মা বাল্যবিবাহের উদ্যোগ নিয়েছেন—এমন সংবাদ পাওয়ার পর মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের তালা কিশোর-কিশোরী ক্লাবের জেন্ডার প্রোমটার বিউটি আক্তার, আবৃত্তি শিক্ষক আনিছা খাতুন ও দেদারুল ইসলাম দুই ছাত্রীর বাড়িতে খোঁজ নেন। তাঁরা দেখেন, ওই দুই ছাত্রীর বয়স যথাক্রমে ১৪ ও ১৫ বছর। তাঁরা বাল্যবিবাহ বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে সোমবার দুপুরে কনেসহ মা–বাবাকে তালা ইউএনও দপ্তরে হাজির করেন। ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাল্যবিবাহের উদ্যোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

এদিকে উপজেলার খলিলনগর ইউপির এক ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ২৩ সেপ্টেম্বর গোপনে বাল্যবিবাহ দেওয়ায় মা–বাবাকেও গতকাল দুপুরে ইউএনও কার্যালয়ে হাজির করা হয়। বাল্যবিবাহ দেওয়ায় কনের মায়ের নামে থাকা দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) কার্ড বাতিল করা হয়। পাশাপাশি মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে কার্যকর হবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অর্থাৎ ১৮ বছরের আগপর্যন্ত ওই ছাত্রী মা–বাবার বাড়িতেই থাকবে।

এ ছাড়া জালালপুর ইউনিয়নের দশম শ্রেণির ছাত্রী গোপনে বাল্যবিবাহ করে ঢাকায় অবস্থান করছে অভিযোগের ভিত্তিতে তার মা–বাবাকেও ডাকা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের নির্দেশ দেন, মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে এসে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রত্যেক কনের মা–বাবার কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন। পাশাপাশি শর্ত ভঙ্গ করলে প্রত্যেকের মা–বাবাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন তালা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, তালা কিশোর-কিশোরী ক্লাবে জেন্ডার প্রোমটার বিউটি আক্তার, আবৃত্তি শিক্ষক আনিছা খাতুন ও দেদারুল ইসলাম।