মাঝপথে ভ্যান থামিয়ে পুনরায় গণনার কথা বলে ঋণের টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৩
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অভিনব ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এক নারী। বেসরকারি সংস্থাটির কর্মী পরিচয় দিয়ে মাঝপথে ওই নারীর ভ্যান থামিয়ে পুনরায় গণনার কথা বলে ঋণের ৮০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছেন এক ছিনতাইকারী। তবে তাঁর তিন সহযোগীকে আটক করেন স্থানীয় জনতা।
গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পুলিশ দুই দফা চেষ্টা চালিয়ে গতকাল রাতে ওই তিন ছিনতাইকারীকে স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। রাতেই মামলা দায়েরের পর আজ মঙ্গলবার তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
গ্রেপ্তার তিন ছিনতাইকারী হলেন হাফিজুর রহমান (৩৮), রেজাউল ইসলাম (৩৫) ও আবেদ আলী (৩৬)। তাঁদের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার হাজিগোবিন্দপুর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী ফিরোজা বেগম উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের রক্ষিতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গতকাল দুপুরে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের বাগমারার হাটগাঙ্গোপাড়া শাখা থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি কানাইশহর এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে আসা তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে চারজন ভ্যানটি থামান। এ সময় তাঁরা নিজেদের ব্র্যাকের লোক পরিচয় দেন। তাঁরা ফিরোজাকে বলেন, ঋণ দেওয়া টাকায় সমস্যা আছে এবং আবার গণনা করতে হবে। ফিরোজা বিশ্বাস করে ঋণের টাকা তাঁদের হাতে তুলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে একজন মোটরসাইকেল নিয়ে সটকে পড়েন। বাকি তিনজনও পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ফিরোজা চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তিনজনকে ধরে ফেলেন।
বিষয়টি জানার পর ফিরোজার গ্রামের লোকজন হাটগাঙ্গোপাড়ায় পৌঁছে ছিনতাইকারীদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নিয়ে যান। টাকা উদ্ধারের পর তাঁদের পুলিশে দেবেন বলে ঘোষণা দেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের মারপিট করে ইউপির একটি কক্ষে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেলে ছিনতাইকারীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। তবে স্থানীয় লোকজনের তোপের মুখে ফিরে আসে।
পরে সন্ধ্যায় বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহার করা দুটি মোটরসাইকেলও জব্দ করে পুলিশ।
আউচপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ডি এম সাফিকুল ইসলাম বলেন, ছিনতাইয়ের শিকার নারী তাঁর আত্মীয় হন। এ জন্য ছিনতাইকারীদের নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। তাঁরা গণপিটুনির শিকার হতে পারেন—এমন আশঙ্কায় একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
বাগমারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তিন ছিনতাইকারীকে থানায় আনা হয়েছে। রাতে ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে।