নোয়াখালীতে অস্ত্র–হাতবোমাসহ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
নোয়াখালীতে কোস্টগার্ডের অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র, হাতবোমাসহ ইউনিয়ন বিএনপির এক সাবেক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে মিজান মাঝি (৪৫)। তিনি সুবর্ণচরের চরবাটা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চরবাটা ইউনিয়নে নিজ বাড়ি থেকে মিজান মাঝিকে আটক করে কোস্টগার্ড। পরে তাঁকে হাতিয়া কোস্টগার্ড স্টেশনে নেওয়া হয়েছে। এরপর আজ শুক্রবার বিকেলে হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। মিজান মাঝির হাতিয়ায় মাছের ব্যবসা রয়েছে।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আবু বক্কর ছিদ্দিক ওরফে মিজান মাঝিকে আজ বিকেলে থানায় হস্তান্তর করেছে কোস্টগার্ড। তাঁর বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ছাড়া উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।
আজ বিকেলে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার বিএন মো. সিয়াম-উল-হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, হাতিয়ার বাংলাবাজার মাছঘাটে মিজান মাঝির মাছের আড়তে বিপুল অস্ত্র মজুত রয়েছে—এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিজান মাঝির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাংলাবাজার বিসমিল্লাহ মৎস্য আড়তে তল্লাশি চালিয়ে ৯টি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি গুলি, ৩টি দেশি অস্ত্র ও ২৯টি হাতবোমা জব্দ করা হয়েছে।
তবে মিজান মাঝির স্ত্রী আফরোজা বেগম অভিযোগ করেন, রাত আড়াইটার পর ৩০-৩৫ জন বাড়ির দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে নিজেদের কোস্টগার্ড পরিচয় দেন। পরে তাঁর স্বামীর হাত-পা ও চোখ বেঁধে নিয়ে যান।
ছেলে শাহাদাত হোসেনের দাবি, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা বা অভিযোগ নেই। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে আজ দুপুরে উপজেলার ভূঁইয়ার হাট বাজারে তাঁর মুক্তির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মানববন্ধনে সুবর্ণচরের ভূঁইয়ার হাট বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা, ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ, আবুল খায়ের, আব্দুল করিম প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁদের দাবি, মিজান মাঝি রাজনৈতিক নেতা হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায়ী; তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বা দাঙ্গার কোনো অভিযোগ নেই। তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এ বি এম জাকারিয়া বলেন, মিজান মাঝি দলের পরীক্ষিত নেতা। রাতের অন্ধকারে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে—ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
জানতে চাইলে চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, কোস্টগার্ডের অভিযান সম্পর্কে তাঁদের অবহিত করা হয়নি। থানায় মিজান মাঝির নামে কোনো মামলা নেই।
কোস্টগার্ডের মিডিয়া ইউনিটের ইনচার্জ মিজান পারভেজ প্রথম আলোকে বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং বিপুল অস্ত্রসহ মিজান মাঝিকে গ্রেপ্তার করা হয়।