‘ভাবছিলাম শুধু রাজশাহীতে ধর্মঘট, এহন দেহি পাবনাতেও’

ধর্মঘটের কারণে পাবনায় চলছে না বাস–ট্রাকসহ দূর পাল্লার গণপরিবহন। ফলে ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের। আজ পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে
ছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পাবনায় বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ঢাকা-পাবনার দূরপাল্লার বাসও। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। তবে এ ধর্মঘটকে প্রহসন বলছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতে জেলায় জেলায় নাটক চলছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের বাস টার্মিনাল ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, স্বাভাবিকের তুলনায় লোকসমাগম কম। হঠাৎ ধর্মঘটে সবাই যেন হতভম্ব। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালগুলোয় নেই কোনো কোলাহল। অলস বসে আছে বাসগুলো। শ্রমিকেরা নেই টার্মিনাল এলাকায়। অনেক যাত্রী যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করছেন। স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চেপে চলাচল করলেও বিপাকে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা।

সকালে বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশে বের হয়েছিলেন শহরের রাধানগর মহল্লার আনোয়ার হোসেন। পাবনা বাস টার্মিনালে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কোনো বাস পাননি তিনি। কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাবছিলাম শুধু রাজশাহীতে ধর্মঘট। এহন দেহি পাবনাতেও। রাজনীতির মারপ্যাঁচ তো আমরা বুঝিনে। খালি খালি প্যারায় পড়ি।’

মঞ্জুয়ারা খাতুন নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি বগুড়ায় এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে যেতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন, কিন্তু যেতে পারছেন না। কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো বাস পাননি। এখন বাড়ি ফিরে যাবেন ভাবছেন।

হঠাৎ ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাসুদ খন্দকার বলেন, এটি প্রহসনের ধর্মঘট। একটা বাচ্চাও জানে, এই ধর্মঘট কেন ডাকা হয়েছে। রাজশাহীর সমাবেশ ঠেকাতেই সরকার জেলায় জেলায় এই নাটক করছে। তবে এতে কোনো লাভ নেই। মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছে। যত বাধা দেওয়া হবে, মানুষ তত গর্জে উঠবে।

ধর্মঘটের বিষয়ে পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের অভিযোগ সঠিক নয়। ১১ দফা দাবিতে আমরা আগেই আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম। এতে কোনো কাজ হয়নি। ফলে এই ধর্মঘট। এখানে বিএনপি বা তাদের সমাবেশের কোনো বিষয় নেই।’