নান্দাইলে বিএনপির মিছিলে বাধা, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ৫০

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের মাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছে বৃহস্পতিবার বিএনপি–পুলিশের সংঘর্ষ হয়
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে আয়োজিত মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে। এ সময় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। ইটের আঘাতে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ১৫টি রাবার বুলেট ও ৪টি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নান্দাইল সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের মাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছে অবস্থিত আনোয়ারুল হোসেন খান চৌধুরী মহিলা কলেজের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। বাসস্ট্যান্ডটি ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। বাসস্ট্যান্ডের উত্তর পাশে রয়েছে বিএনপির আঞ্চলিক কার্যালয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবরোধ কর্মসূচি উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক মোয়াজ্জেমপুর এলাকায় জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা মিছিল নিয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আগে থেকে উপস্থিত পুলিশের সদস্যেরা মিছিল মহাসড়কে যেতে বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলকারীদের সড়ক থেকে দূরে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করলে তাঁরা পিছু হঠেন। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের হাতেও লাঠিসোঁটা ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা আরও বলেন, কাঁদানে গ্যাসের ঝাঁজালো গন্ধে অনেককে চোখে–মুখে হাত রেখে সড়কে শুয়ে আত্মরক্ষা করতে দেখা গেছে। মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার মুদিদোকানি আবদুর রাশিদ বলেন, পুলিশ ও মিছিলকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে তিনি দোকান বন্ধ করে ভেতরে বসে ছিলেন। নয়নপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, তিনি একজনকে পুলিশের হেলমেটে আঘাত করতে দেখেছেন।

ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. এনামুল হক মুঠোফোনে বলেন, পুলিশের নিক্ষেপ করা কাঁদানে গ্যাসে এবং রাবার বুলেটের স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫০ জনের মতো নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।

স্থানীয় যুবদল নেতা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, তাঁদের মিছিলটি ছিল শান্তিপূর্ণ। বিনা কারণে বাধা দিয়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করলে উত্তেজনা বাড়ে। তখন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, মিছিলকারীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের প্রতি মারমুখী হয়ে ওঠেন। তাঁরা এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা শুরু করেন। ইটের টুকরার আঘাতে পুলিশের দুজন সদস্য আহত হন। তখন পুলিশ আত্মরক্ষা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ১৫টি রাবার বুলেট ও ৪টি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ঘটনাস্থল থেকে আবদুল আওয়াল নামের একজনকে আটক করে থানায় পাঠানো হয়।