কুড়িগ্রামে পুকুর থেকে নিখোঁজ যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

লাশ উদ্ধারের পর স্বজনদের আহাজারি। সোমবার বিকেলে হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় পুকুর থেকে এক যুবকেরণ অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেল পাঁচটায় হাসপাতাল সড়কে অবস্থিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএসের কার্যালয়ের পেছনের পুকুর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গতকাল রোববার রাতে পুলিশ তিন যুবককে আটক করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার আটক যুবকদের নামে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নিহত যুবকের নাম মাহমুদুল ফেরদৌস (২৮)। তিনি রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের ছিনাইহাট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছবেরুল হকের ছেলে। মাহমুদুল ২০২১ সালে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাস করেছেন।

পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, ৯ অক্টোবর বেলা ২টার সময় মাহমুদুল বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় তাঁর বড় ভাই মাহবুবুল ফেরদৌসকে অচেনা এক নম্বর থেকে ফোন করেন মাহমুদুল। সে সময় মাহমুদুল তাঁর ভাইকে বলেন, তাঁকে কয়েকজন আটকে রেখেছে। দ্রুত পাঁচ হাজার টাকা দিলে তবেই তাঁকে ছেড়ে দেবে। কিন্তু সে সময় তাঁর ভাই একটি সভায় ব্যস্ত ছিলেন। পাঁচ হাজার টাকা দিতে কিছুটা দেরি হবে বলে জানায়। কিছুক্ষণ পর ওই নম্বরে ফোন দিয়ে ভাইকে না পেয়ে বিষয়টি মাহবুবুল বাসায় জানান। এরপর মাহমুদুলকে আর কোথাও খুঁজে না পেয়ে তাঁর বাবা ছবেরুল হক রাজারহাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরে জিডির সূত্র ধরে পুলিশ গতকাল রোববার রাতে তিনজনকে আটক করে। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার পুলিশ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের মাঠ থেকে মাহমুদুলের ছেঁড়া গেঞ্জি ও আরডিআরএস কার্যালয়ের পেছনের পুকুর থেকে মামুনের লাশ উদ্ধার করে। তবে কয়েক দিন হয়ে যাওয়ায় লাশটি পচতে শুরু করেছে।

নিহতের বড় ভাই মাহবুবুল ফেরদৌস বলেন, মাসখানেক আগে একই গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী আবরুদ্দির একটি বড় মাদকের চালান মাহমুদুল পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেন। এ ঘটনার পর আবরুদ্দির স্ত্রী বাড়িতে এসে মাহমুদুলকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ ঘটনার সঙ্গে এর যোগসাজশ থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, তাঁর ভাই যে এত বড় বিপদে আছেন, তা তিনি বুঝতে পারেননি। বুঝলে তিনি টাকা পাঠাতে একটুও দেরি করতেন না।

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমীন জানান, নিখোঁজ যুবকের পরিবারের করার জিডির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অনুসন্ধানে নামে। লাশ উদ্ধারের পর ওই তিন যুবকের নামে নিহতের বাবা রাজারহাট থানায় মামলা করেছে। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।