বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীর দ্বন্দ্ব সমন্বয় সভায়ও

আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের প্রথম সমন্বয় সভা। আজ দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষেছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আনোয়ারা আওয়ামী লীগের বর্তমান অর্থ প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অনুসারীদের দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়েছে উপজেলা পরিষদের প্রথম সমন্বয় সভায়ও। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়; কিন্তু এতে অংশ নেননি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারী ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে সভায় উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে।

তবে নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের সামনে আসতে ভয় পাচ্ছেন।

আজ অনুষ্ঠিত প্রথম সভায় সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন। সভায় উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক এবং দুই ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান ও চুমকি চৌধুরী। উপজেলায় ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) সংসদীয় আসন এলাকায় কর্তৃত্ব নিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অনুসারী তৌহিদুল হক চৌধুরীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন ওয়াসিকা আয়শা খানের অনুসারী কাজী মোজাম্মেল হক। নির্বাচনের পর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এ নিয়ে মামলাও হয়।

সভায় উপস্থিত না হওয়ার ব্যাপারে উপজেলার বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নান চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের হামলাকারীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনের পর কয়েকজনকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তাই নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কিত হয়ে তাঁরা সভায় যাননি। নিরাপত্তার পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সভায় অংশ নেবেন না।

তবে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে বরুমচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসেছেন, তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করেন কোনো ভয়ভীতি আছে কি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওরা (ইউপি চেয়ারম্যান) কখনো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারেনি। তাই জনগণের সামনে আসতে ভয় পায়। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করায় লজ্জায় নতুন নাটক সাজিয়েছে।’

গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২২ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের সমর্থিত কাজী মোজাম্মেল হক। ওই নির্বাচনে উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানরা কাজী মোজাম্মেল হকের বিপক্ষে ছিলেন।

ইউপি চেয়ারম্যানদের অভিযোগ প্রসঙ্গে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের একাধিক মাধ্যমে জানানো হয়েছে; কিন্তু তাঁরা আসেননি। উপজেলা পরিষদের সভা উপজেলার সর্বোচ্চ ফোরাম, তাঁরা সেখানে এসে তাঁদের নিরাপত্তা সমস্যার কথা বললে তা যথাযথ হতো।