সম্মেলনের সাত মাসেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি

পদপ্রত্যাশী নেতাদের ভাষ্য, সামনে নির্বাচন থাকায় দলকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। এ জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকা আবশ্যক।

গাজীপুর জেলার মানচিত্র

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল গত বছরের ১৯ নভেম্বর। ওই সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা করা হয় শুধু। এরপর চলে গেছে সাত মাসের বেশি সময়। এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত না হওয়ায় পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। তাঁরা দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

সম্মেলনের আগেই নগরের ৯টি সাংগঠনিক থানা ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কথা ছিল। সেগুলোও ঝুলে আছে। মাত্র দুটি থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং তিনটি থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর থেকে থমকে আছে থানা ইউনিটের কমিটির কাজ।

মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান পরাজিত হয়েছেন। দলকে আরও শক্তিশালী করতে হলে মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকা খুবই জরুরি।

সাধারণ সম্পাদক হজ পালন করতে গিয়েছেন। তিনি দেশে ফিরে এলেই আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।
আজমত উল্লা খান, সভাপতি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক নির্বাহী সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবদুল হাদি শামিম বলেন, সিটি নির্বাচনের আগেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কারণে সেটি আর সম্ভব হয়নি। এই নেতা মনে করেন, সিটি নির্বাচনের আগেই মহানগর ও থানা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হলে সিটি নির্বাচনে নেতাদের আরও বেশি দায়িত্ব দেওয়া যেত। সে ক্ষেত্রে দলীয় প্রার্থীর জয়লাভের সম্ভাবনাও বেশি থাকত।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয় গত বছরের ১৯ নভেম্বর। নতুন কমিটিতে আজমত উল্লা খানকে সভাপতি ও আতাউল্লা মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আগের কমিটিতেও সভাপতি ছিলেন আজমত উল্লা। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম।

দল থেকে তিনি বহিষ্কৃত হওয়ার পর এই পদে আসেন আতাউল্লা। নতুন কমিটিতে তাঁদের হাতেই নেতৃত্ব দিয়েছে দল। ১৯ নভেম্বর ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে সম্মেলন শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে নাগাদ হবে, তা জানেন না কেউই। মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহম্মদ বলেন, ‘আমরা তো ভাই সাবেক হয়ে গেছি। কেন বা কী কারণে কমিটি হচ্ছে না, সেটা সভাপতি আর সম্পাদকই ভালো বলতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে গেলেই স্ববিরোধী কথাবার্তা হয়ে যাবে।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে কোনাবাড়ী, কাশিমপুর থানা সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয় দীর্ঘদিন পর। বাসন, গাছা, পুবাইল থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।

একইভাবে সম্মেলন হলেও কোনো কমিটি হয়নি টঙ্গী পূর্ব, টঙ্গী পশ্চিম থানা ও কাউলতিয়া সাংগঠনিক থানা আওয়ামী লীগের। এতে সংশ্লিষ্ট থানা ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার জন্য কাজ শুরু করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক হজ পালন করতে গিয়েছেন। তিনি দেশে ফিরে এলেই আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।