বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাইলেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর কাফি
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফি তাঁর বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও তাঁদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের রজপাড়া গ্রামে পুড়ে যাওয়া বাড়ির সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সরকারকে এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
নুরুজ্জামান কাফি তাঁর পুড়িয়ে দেওয়া ঘরের ধ্বংসস্তূপের সামনে বসে আক্ষেপ করে বলেন, ‘ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকে আমার মা–বাবা, ভাই-ভাতিজি সবাইকে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল। আমি তো নতুন বাংলাদেশ গড়তে আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে ছিলাম। অথচ আমার এখন পুরো ঘরটা নাই। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, সাত দিন টাইম। যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। নইলে সাত দিন পরে রাজপথে একা দাঁড়াব।’
কাফি আবেগপ্রবণ হয়ে আরও বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি রেখে দুবার কান্না শুনেছি মা–বাবার। ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্টে পালিয়ে থাকা অবস্থায় একবার, আর গত রাতে বসতঘর পুড়িয়ে দেওয়ার পরে আরেকবার।’
নুরুজ্জামান কাফির বাবা রজপাড়া দ্বীন-ই-ইলাহী দাখিল মাদ্রাসায় সুপার হিসেবে কর্মরত। তাঁরা দুই ভাই। এ বিষয়ে নুরুজ্জামান কাফির বাবা এবিএম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে আমাদের ঘরটিতে দুর্বৃত্তরা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। যে যার মতো করে দরজা ভেঙে আমরা বের হয়েছি। কিছু রক্ষা করতে পারিনি, সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলে দেশ গড়ার কাজ করেছেন। এতে প্রতিপক্ষ শক্তি ক্ষুব্ধ হয়েছে। সে কারণে আমাদের পুড়ে মারার জন্যই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমরা এ নাশকতার তদন্তপূর্বক বিচার চাই।’
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে নুরুজ্জামান কাফির গ্রামের বাড়ি দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। কাফির বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার খবর শোনার পর কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কলাপাড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হুমায়ুন সিকদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মোহাম্মদ ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ নাননু মুন্সী উপস্থিত ছিলেন।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন সিকদার বলেন, ‘কাফির বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নাশকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এর সঙ্গে জুলাই বিপ্লবে পরাজিত শক্তি জড়িত রয়েছে। যথাযথ তদন্ত করে এ ঘটনায় জড়িত অপশক্তিকে খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা অতি দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা দেখতে চাই। আশা করি, পুলিশ বিভাগ তাদের দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এ নাশকতার রহস্য বের করবে।’
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’