নবীগঞ্জে ফেসবুকে লেখালেখি নিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ১ জনের মৃত্যু
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ফেসবুকে লেখালেখি নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ফারুক তালুকদার (৪২) নামে এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় হাসপাতাল থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ওই ব্যক্তি তিমিরপুর গ্রামের আওয়াল তালুকদারের ছেলে। পেশায় তিনি অ্যাম্বুলেন্সচালক ছিলেন। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফেসবুকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেখালেখি নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী আশায়েদ আলীকে ৪ জুলাই নবীগঞ্জ উপজেলার আনমুন এলাকায় অপর গণমাধ্যমকর্মী সেলিম তালুকদার ও তাঁর লোকজন মারধর করেন বলে অভিযোগ। এ সময় আনমুন গ্রামের লোকজন হামলাকারীদের মধ্য থেকে ২ তরুণকে আটক করে পুলিশে দেন। পুলিশে দেওয়া এ দুই তরুণের বাড়ি উপজেলার তিমিরপুর গ্রামে। এতে তিমিরপুর গ্রামের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তাঁদের লোকজনকে আনমুন গ্রামের লোকজন ধরে পুলিশে দেওয়ায়। এ নিয়ে তিন দিন আগে ওই দুই গ্রামের লোকজন মারামারি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ মারামারির সূত্র ধরে সোমবার দুপুরে ঘোষণা দিয়ে আনমুন ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হতে থাকেন নিজ নিজ এলাকায়। একপর্যায়ে বিকেলে উপজেলা সদরে ওই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের লোকজন ইটপাটকেল, বল্লম, ধারালো অস্ত্রসহ নানা দেশি অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেন। সংঘর্ষকালে ফারুক তালুকদারসহ উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক লোকজন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি দোকানপাট। এতে পুরো উপজেলা শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা প্রশাসন এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নবীগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। এ ১৪৪ ধারা মঙ্গলবার মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন।
এদিকে সংঘর্ষকালে গুরুতর আহত ফারুক তালকুদারকে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পথে তিনি ওই দিন রাত ৯টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর এলাকায় প্রাণ হারান।
নিহত ফারুক তালুকদারের বাবা আওয়াল তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ছেলেকে সংঘর্ষকালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করা হয়। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে নেওয়ার পথে মারা যান।