কক্সবাজারের উন্নয়ন কেবল জাতীয় ইস্যু নয়, এটি এখন বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতের অংশ, বঙ্গোপসাগরের অর্থনীতি ও আঞ্চলিক রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।
কক্সবাজারের পর্যটন, নিরাপত্তা, পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামো—এই পাঁচ স্তম্ভেই টেকসই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ‘কক্সবাজারের উন্নয়নযাত্রার জোয়ার ভাটা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এই অভিমত তুলে ধরেন।
কক্সবাজার কমিউনিটি অ্যালায়েন্স (সিসিএডি) এ সংলাপের আয়োজন করে। রাজনীতিক, অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মানবাধিকারকর্মীরা সংলাপে অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, কক্সবাজার এখন একটি গ্লোবাল হাব। এটি এখন আন্তর্জাতিক ব্যবসা, পর্যটন, নীল অর্থনীতি ও ভূরাজনৈতিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু। কক্সবাজারের উন্নয়ন এখন আর সম্ভাবনার প্রশ্ন নয়; বরং কৌশলগত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় এসেছে।
আলোচনায় অংশ নেন কক্সবাজার-২ (পেকুয়া-কুতুবদিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, কক্সবাজার-৩ (সদর, রামু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী সদস্য মো. সহিদুজ্জামান, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম, এনসিপির সাংগঠনিক সমন্বয়ক এম এম সুজা উদ্দিন প্রমুখ।
হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, রাষ্ট্রকে দেওয়ার মতো কক্সবাজারের অনেক কিছু আছে—অসীম প্রাকৃতিক সম্পদ, সমুদ্র অর্থনীতি ও সম্ভাবনাময় মানুষ। এই উন্নয়নকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে এনে জনগণ ও স্থানীয় নেতৃত্বের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে।
রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, আগামীর কক্সবাজার হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির মূল কেন্দ্র হবে কক্সবাজার। কক্সবাজারের খনিজ নিয়ে প্রযুক্তিবান্ধব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ছয় লেনে উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বিশুদ্ধ পানি ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত এখন কক্সবাজারের বড় সংকট। স্থানীয়দের সম্পৃক্ত না করলে কোনো প্রকল্প টেকসই হবে না।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সিসিএডির প্রধান সমন্বয়ক মোহিব্বুল মোক্তাদির তানিম বলেন, ‘কক্সবাজারের মানুষ, প্রকৃতি ও সম্ভাবনাকে একত্র করে আমরা দায়িত্বশীল উন্নয়নের ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন, সিআইসিআরবির জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ড. সাইকুল ইসলাম, এলজিইডি প্রকৌশলী মনজুর সাদেক, পেকুয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ, অধ্যাপক নাদিম খন্দকার, নাসির উদ্দিন, স্থপতি আসিফ আহছুনুল হক, হেদায়েত আজিজ প্রমুখ।