শহীদ পরিবারের কমপক্ষে একজনকে সম্মানজনক চাকরি দেওয়ার দাবি জামায়াতের আমিরের
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, লড়াই করে যাঁরা আহত ও নিহত হয়েছেন, তাঁরা কোনো চাকরি পাওয়ার জন্য বা কারও সহায়তা পাওয়ার জন্য লড়াই করেননি। তাঁরা নিঃশর্ত লড়াই করেছেন, জাতিকে সম্মানিত করার জন্য। জাতির এখন দায়িত্ব এই পরিবার এবং ব্যক্তিদের সম্মানিত করা। সরকারের কাছে দাবি, তাঁদের যেন প্রাপ্য স্বীকৃতিটুকু দেওয়া হয়; প্রত্যেক শহীদ পরিবারের কমপক্ষে একজনকে যেন সরকার সম্মানজনক চাকরি দেয়। আজ শুক্রবার সকালে গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শহীদ পরিবারের উদ্দেশে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে এসেছি, আপনাদের অনুগ্রহ করার জন্য নয়, বরং আপনাদের দোয়া নিয়ে আমাদের বুকটা শীতল করার জন্য। আপনারা আমাদের অহংকারের পাত্র, আমাদের মর্যাদার পাত্র, আমাদের সম্মানের পাত্র। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব, তাদের সঠিক স্বীকৃতিটা যেন দেওয়া হয়। পাঠ্যপুস্তক কারিকুলামে আগামী দিনের নাগরিকেরা যেন জানেন, তাঁদের আবু সাঈদরা ছিলেন।’
কারখানার শ্রমিক অসন্তোষ ও আন্দোলনে নিয়ে মালিক-শ্রমিকদের বিষয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘একটি গোষ্ঠী আমাদের দেশের মালিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধিয়ে রাখে। যারা এই সমাজের দুশমন, তারাই শিল্প ধ্বংস করতে চায়। তারা শ্রমিকদের আবেগকে উসকে দিয়ে রাস্তায় নামায়। মরে শ্রমিকেরা, ঘরে বসে বেনিফিট নেয় তারা। আবার কিছু মালিক আছে, যারা শ্রমিকের শুধু ঘাম নয়, পারলে রক্তটাও চুষে নিতে চায়। শিল্প যারা বাঁচাবে, তাদের বাঁচতে দিন। আপনি তাদের সম্মান করবেন, তারা তাদের সর্বোচ্চটা আপনাকে উজাড় করে দেবে।’
জামায়াতে ইসলামীর আমির আরও বলেন, ‘আমরা চাই, ব্যবসায়ীরা তাদের জায়গায় ব্যবসা করবেন। কোনো দুর্বৃত্তের সাহস হবে না, তাদের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়ার। যাকে আল্লাহ গরিবি হালাতে রেখেছেন, প্রয়োজনে সে ভিক্ষা করবে কিন্তু কোনো ক্যাডারকে এর আগে চাঁদা দেবেন না। সামাজিক নিরাপত্তা এমন হবে, ঘরের দরজা খুলে হোক বা বন্ধ করে হোক সে শান্তিতে ঘুমাবে। কিন্তু ইজ্জত-সম্পদের ওপর আঘাত থাকবে না।’
জামায়াতে ইসলামী গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি মুহাম্মদ জামাল উদদীনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য খলিলুর রহমান, ঢাকা উত্তর অঞ্চল টিমের সদস্য আবুল হাসেম খান ও দেলাওয়ার হোসেন, গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ খায়রুল হাসান, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাউদ্দিন আইউবী প্রমুখ।