ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই বালুমহাল থেকে ৫ খননযন্ত্র জব্দ, আবার শর্ত ভাঙলে ধ্বংস

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মেঘনা নদীর কেদেরখোলা বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। গত রোববার দুপুরে
প্রথম আলোর ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় মেঘনা নদীর কেদেরখোলা বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগে পাঁচটি খননযন্ত্র জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান।

গত বুধবার প্রথম আলোতে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহালের সীমানার বাইরে চলছে দিন-রাত বালু উত্তোলন’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর এক দিনের ব্যবধানে কেদেরখোলা বালুমহালে অভিযান চালায় প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুলাই কেদেরখোলা বালুমহালটি মো. বরকত উল্লাহর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাহানারা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড সাপ্লায়ার্সকে আড়াই কোটি টাকায় ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ইজারার শর্ত অনুযায়ী, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ১০টি খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলার কথা। কিন্তু সে নিয়ম না মেনে দিন-রাত সমানতালে ১৫ থেকে ২০টি খননযন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় লোকজন।

আরও পড়ুন

৭ আগস্ট কেদেরখোলা বালুমহালের সঠিক সীমানা নির্ধারণসহ অপরিকল্পিত ও নিয়মবহির্ভূতভাবে বালু তোলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে চিঠি দেন উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, কেদেরখোলা বালুমহালের আয়তন ২০ একর। শিবপুর, দাসকান্দি, নজরদৌলত (গাছতলা), ছয়গরহাটি, কেদেরখোলা গ্রামের সামনে দিয়ে ১০০ থেকে ১২০ একর জায়গাজুড়ে ৮০-৯০ ফুট গভীর করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন দিন–রাত সমানতালে বালু তোলা হচ্ছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, কেদেরখোলা বালুমহালে নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে ইজারাদারসহ তাঁর লোকজন খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন বলে স্থানীয় লোকজন উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে কেদেরখোলা মৌজায় অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান। এ সময় তাঁরা ইজারাদার ও তাঁর লোকজনকে কেদেরখোলা মৌজার বালুমহালের নির্ধারিত সীমানার বাইরে গিয়ে পাঁচটি খননযন্ত্র দিয়ে বালু তুলতে দেখতে পান। এরপর খননযন্ত্রগুলো জব্দ করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদা জাহান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযানের সময় মালিক, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে সীমানার বাইরে থেকে বালু উত্তোলন না করার শর্তে তাঁদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করা হয়েছে। পাঁচটি খননযন্ত্র নদীর পাড়ে নিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ইজারাদারকে নির্ধারিত সীমানা থেকে ১০টি খননযন্ত্র ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের নির্দেশনা দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সীমানার বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলন করায় জেলা প্রশাসন থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা পাঁচটি খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করবেন। জব্দ করা পাঁচটি খননযন্ত্র তাঁরা ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্দেশনা অমান্য করা হলে খননযন্ত্রগুলো ধ্বংস করা হবে।