লাকসামে ইউএনওর বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদের বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে দুই দিন ধরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এসব কর্মসূচিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা-লাকসাম-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম বাইপাস হাউজিং মসজিদের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল দৌলতগঞ্জ বাজার ঘুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে দুপুর ১২টার দিকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বুধবার লাকসাম উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে ও বাইপাস এলাকায় একই দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আজ মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাত্র ১০ মাসে ইউএনও কাউছার হামিদ লাকসামের মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। জনগণের পক্ষে কাজ করায় তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বদলি করা হয়েছে। তাঁরা দ্রুত এই আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় মহাসড়ক অবরোধ ও সরকারি অফিস-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার মতো কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সমাবেশে বক্তব্য দেন লাকসাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক (একাংশের) ফারুক আল শারাহ, লাকসাম সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক জি এম এস রুবেল, নারী উদ্যোক্তা হাজেরা কুদ্দুস রূপা, শিক্ষার্থী সাইফ উদ্দীন মজুমদার, খুন্তা ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাহ্ নূর, উপজেলা যুব অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব আল আমিন, কারাতে প্রশিক্ষক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।
লাকসাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘কাউছার হামিদের মতো এমন জনবান্ধব ইউএনও লাকসামে খুব কমই এসেছেন। মাত্র ১০ মাসেই তিনি জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন। জনগণের পক্ষে কাজ করায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করে তাঁকে বদলির চেষ্টা চালাচ্ছে।’
লাকসাম সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক জি এম এস রুবেল বলেন, ‘লাকসামের ইতিহাসে এই ইউএনও সেরা। কর্মদক্ষতা ও সততার মাধ্যমে তিনি মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাঁর বদলি ষড়যন্ত্রমূলক এবং অযৌক্তিক। আমরা দ্রুত এই বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। না হলে জনগণ কঠোর আন্দোলনে যাবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন–২ শাখার উপসচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে কাউছার হামিদকে বরিশাল বিভাগে বদলি করা হয়। তবে তাঁকে কোথাও পদায়ন করা হয়নি। ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাঁকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ১৮ সেপ্টেম্বর অপরাহ্নে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন।
এ বিষয়ে ইউএনও কাউছার হামিদ বলেন, ‘প্রায় ১০ মাস হলো এখানে যোগদান করেছি। কেন বদলি করা হলো, তা আমার জানা নেই। তবে সরকারি চাকরিতে বদলি স্বাভাবিক বিষয়। যেখানেই যাব বা সরকার যেখানে পাঠাবে, নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করব। লাকসামে কাজ করতে গিয়ে মানুষের সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেয়েছি। আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ, তবে সবাইকে শান্ত থাকতে বলব। কারণ, আমাকে সরকারি নির্দেশনা মেনেই চাকরি করতে হবে।’