স্ত্রীর মৃত্যুর দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে স্বামীও না ফেরার দেশে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাফিজা আক্তার (৪৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁর স্বামী মো. শাহাবুদ্দিনও (৫৫) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে স্ত্রী নাফিজা আক্তারের মৃত্যু হলে তাঁর লাশ বাড়িতে নেওয়া হয়। স্ত্রীর লাশ দেখে স্বামী শাহাবুদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁরও মৃত্যু হয়।

শাহাবুদ্দিন জেলা শহরের দাতিয়াড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হোসেনের ছেলে। তাঁর স্ত্রী নাফিজা জেলার বেসরকারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেলা সাড়ে তিনটায় ও শাহাবুদ্দিন বিকেল পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। তাঁদের দুজনের লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বজনেরা।

নিহত দম্পতির পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েক দিন ধরে নাফিজা আক্তার কিডনি রোগে ও শাহাবুদ্দিন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ছিলেন। নাফিজাকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতেন পরিবারের লোকজন। অন্যদিকে এক সপ্তাহ আগে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শাহাবুদ্দিনের হার্টে রিং স্থাপন করা হয়। আজ বেলা আড়াইটার দিকে শহরের দাতিয়াড়ার বাসায় নাফিজা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বজনেরা তাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। বেলা ৩টা ৪০ মিনিটে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক বিকাশ বণিক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। নাফিজার লাশ বাড়িতে নেওয়ার পরে তাঁর স্বামী শাহাবুদ্দিনও অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বজনেরা তাঁকে চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিকাশ বণিক প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল বুধবার হাসপাতালে নাফিজার ডায়ালাইসিস করার কথা ছিল। মঙ্গলবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে অসুস্থ অবস্থায় ওই রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়। ইসিজি পরীক্ষা করে কোনো সাড়া না পেয়ে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

শাহাবুদ্দিনের ছোট ভাই আইনজীবী এম এম শাহাদাৎ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ভাবি মারা যাওয়ার এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে ভাইও মারা যান। তাঁদের দুজনের লাশ দাফনের প্রস্তুতি চলছে। জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল কবরস্থানে তাঁদের লাশ দাফন করা হবে।