বগুড়া কারাগারে আরও এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

লাশ
প্রতীকী ছবি

বগুড়া জেলা কারাগারে বন্দী আরও এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরের দিকে এমদাদুল হক ওরফে ভট্টু (৫২) নামের ওই নেতা কারাগারে অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক সকাল সাতটার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এমদাদুল হক জেলার গাবতলী উপজেলার দক্ষিণ পাড়া ইউনিয়নের লাংলু দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা। তিনি গাবতলী উপজেলার দক্ষিণ পাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এমদাদুলের স্ত্রী নাজমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, রাজনীতি করার কারণে বিস্ফোরক ও ভাঙচুরের মামলায় তাঁর স্বামীকে ২৬ ফেব্রুয়ারি গাবতলী মডেল থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তিনি মাত্র ১২ দিন কারাগারে বন্দী ছিলেন। কারা কর্তৃপক্ষ থেকে লাশ তাঁরা বুঝে নিয়েছেন।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, বগুড়া কারা কর্তৃপক্ষ ভোরের দিকে এমদাদুল হক নামের একজনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার সৈয়দ শাহ শরীফ জানান, এমদাদুল হকের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌যন্ত্রে জটিলতা ছিল। আজ ভোরের দিকে অসুস্থতা বোধ করলে তাৎক্ষণিক তাঁকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করতে পারেননি। নির্বাহী ম্যাজিট্রেটের উপস্থিতিতে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ নিয়ে গত ১১ নভেম্বর থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত চার মাসে বগুড়া কারাগারে বন্দী থাকা পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হলো। তাঁদের অধিকাংশই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে চিকিৎসকের বরাতে জানায় কারা কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ৯ ডিসেম্বর কারাগারে বন্দী অবস্থায় মারা যান জেলার গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল মতিন ওরফে মিঠু (৬৫)। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ওরফে ঝুনু (৫৭) ২৬ নভেম্বর কারাবন্দী অবস্থায় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ২৫ নভেম্বর মারা যান শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ (৬৭)। এ ছাড়া ১১ নভেম্বর কারাবন্দী অবস্থায় মারা যান বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ওরফে রতন (৫৮)।

এ ছাড়া ১৯ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসানকে। পরে তাঁকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। বগুড়া কারাগারে যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় রাগেবুল হৃদ্‌রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে ঢাকায় জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি বগুড়া জেলা কারাগারে বন্দী আছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়া জেলা কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা ৭৭০ জন। বর্তমানে সেখানে বন্দীর সংখ্যা ১ হাজার ৬০৩। ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি বন্দী থাকায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।