সাগরে চার ট্রলারে ডাকাতি, তিন জেলে গুলিবিদ্ধ, ৭০ লাখ টাকার মালামাল লুট
বরগুনার পাথরঘাটা থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে গভীর বঙ্গোপসাগরের বাইচদা বয়া এলাকায় চারটি মাছধরার ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
ডাকাতির কবলে পড়া এফবি তারেক-১ ও এফবি আব্দুল্লাহ তুফান-২ ট্রলারের মালিক ছগির হোসেন এবং এফবি মা ট্রলারের মালিক সেলিম চৌধুরীর বরাত দিয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঘটনার সত্যতা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। আজ খবর পাওয়ার পরপরই পাথরঘাটা থেকে ট্রলার পাঠিয়ে ওই ট্রলারগুলো নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডাকাতির শিকার আরেকটি ট্রলার হলো মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর এফবি মদিনা।
ডাকাত দলের ছোড়া গুলিতে চারটি ট্রলারের তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে এখনো তাঁদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া আরও কয়েকজন জেলেকে রামদা দিয়ে কোপানো হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। একই সঙ্গে ওই চারটি ট্রলারের আনুমানিক প্রায় ৭০ লাখ টাকার মালামাল ডাকাতেরা লুট করে নিয়ে গেছে। লুট হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে জাল, জ্বালানি তেল, খাবার, মাছ ইত্যাদি।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের বাইচদা বয়া এলাকায় গতকাল বেলা ১১টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা ও কক্সবাজার এলাকার বেশ কয়েকটি ট্রলার মাছ শিকার করছিল। এ সময় সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা এফবি তারেক-১, এফবি আবদুল্লাহ তুফান-২, এফবি মা ও এফবি মদিনা ট্রলারে হানা দেয়। এ সময় এফবি তারেক-১ ট্রলারের তিন জেলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের গুলি করে ডাকাতেরা। এ ছাড়া আরও কয়েকজন জেলেকে রামদা দিয়ে কোপানো হয়। জাল, জ্বালানি তেল, খাবারসামগ্রী, মাছ লুট শেষে চলে যাওয়ার সময় ওই চারটি ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল করে রেখে যায় ডাকাত দল। আজ খবর পেয়ে পাথরঘাটা থেকে ট্রলার পাঠিয়ে ডাকাতির কবলে পড়া চারটি ট্রলার নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ডাকাতির শিকার এফবি মা ট্রলারের মালিক সেলিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ বেলা দুইটার দিকে খবর পেয়েছি, ওই ট্রলারগুলো পটুয়াখালী বরাবর এসেছে। ইঞ্জিন বিকল থাকায় ট্রলারগুলো অন্য ট্রলারের সহায়তায় টেনে নিয়ে আসা হচ্ছে। ওই চারটি ট্রলারের আনুমানিক প্রায় ৭০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই জাল ও তেল।’
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতির খবরটি জেনেই জেলা প্রশাসককে তিনি লিখিতভাবে ঘটনাটি জানিয়েছেন। ডাকাতির কবলে পড়া ট্রলারগুলো উদ্ধারে তিনি কোস্টগার্ডের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এ ব্যাপারে কোস্টগার্ডের পাথরঘাটা কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মঈন আহমেদ আজ বেলা সোয়া তিনটায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। আমরা এখন সাগরে রওনা হচ্ছি। পরে কথা বলব।’