২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন দিবাগত রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও মারধরের শিকার হয়েছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চার সন্তানের জননী (৪৫)। আজ রোববার নোয়াখালীতে একটি সমাবেশে সেই দিনের নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সেই চার সন্তানের জননী কান্নাজড়িত কণ্ঠে উল্লেখ করেন, ‘আমি ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অপরাধে সেই দিন আওয়ামী লীগের রুহুল আমিন মেম্বার ও তাঁর লোকজন আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। আমি সেই নির্যাতনের ঘটনা কিছুতেই মন থেকে মুছতে পারছি না। সারাক্ষণ নির্যাতনের দৃশ্য আমার চোখে ভাসে। কিন্তু আজও আমি সেই নির্যাতনের বিচার পাইনি।’
ওই নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর সহকারী সরকারি কৌসুলি সালেহ আহম্মদ সোহেল খান। তিনি বলেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলায় ১৬ জন আসামির মধ্যে ১৫ জন কারাগারে আর ১ জন পলাতক রয়েছেন।
আজ বিকেলে নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত সমাবেশের তিনি সেদিনের নির্যাতনের কথা বলেন। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গুম, খুন, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে ‘নাগরিক উৎকণ্ঠা’ শিরোনামে এই সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি এ জেড এম গোলাম হায়দার। অনুষ্ঠানে ওই নারী ছাড়াও গুম হওয়া ছাত্রদলের কর্মী সোহেলের বাবা মো. শরিফ, গুলিবিদ্ধ কৃষক দলের নেতা আবদুল্লা আল মামুন, গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা আবদুল হাইয়ের স্ত্রী জোসনা আক্তার, কারাবন্দী বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. শরিফ, পঙ্গুত্বের শিকার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও গুলিতে নিহত খুরশিদ আলমের স্ত্রী জোহরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির দুই সদস্য আবদুর রহিম ও এ বি এম জাকারিয়া, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, কারাগারে থাকা কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানের স্ত্রী বেগম রহিম প্রমুখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক বাহার উদ্দিন।