ব্যবসায়ীকে বাস থেকে নামিয়ে ২০টি সোনার বার ছিনতাই

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরের মধুখালীতে যাত্রীবাহী একটি বাস থেকে এক ব্যবসায়ীকে নামিয়ে ২০০ ভরি ওজনের ২০টি সোনার বার ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ওই সোনার মূল্য ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. রাসেল মিয়া (৩২)। তিনি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার চান্দিনা হাসিমপুর এলাকার শহীদ মিয়ার ছেলে।

গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের কামারখালী সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে মধুখালী থানায় একটি মামলা করেন রাসেল মিয়া।

ছিনতাইয়ের শিকার এ ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার তাঁতীবাজারে নিলখী বুলিয়ন স্টোর এবং ঢাকার উত্তরায় নিউ মা-মনি জুয়েলার্স নামে তাঁর দুটি সোনার দোকান রয়েছে। তিনি গয়না বানানোর জন্য চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করেন।

পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রইচ মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

রইচ মিয়া মধুখালীর পশ্চিম আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কামারখালী সেতুর টোল প্লাজায় কাজ করেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে গতকাল বিকেলে মধুখালী থানায় একটি মামলা করেছেন।

ডাকাতেরা ৮-১০ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি শেষ করে উল্লেখ করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ননী গোপাল সরকার বলেন, এ ঘটনায় আজ সকালে পশ্চিম আড়পাড়া গ্রাম থেকে রইচ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তিনি আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাসেল মিয়া গতকাল সকাল পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার বড় বাজারে যাওয়ার জন্য বরিশালগামী সাকুরা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে সোনার বারগুলো ছিল। সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান। সেখান থেকে খান পরিবহনের একটি বাসে করে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খান পরিবহনের বাসটি মধুখালী উপজেলার পশ্চিম আড়পাড়া এলাকার কামারখালী গড়াই সেতুর টোল প্লাজায় পৌঁছায়। টোল পরিশোধের জন্য বাসটি থামলে আট-নয়জন একটি মোটরসাইকেল সামনে থামিয়ে বাসটি আটকান। এরপর তাঁরা বাসের ভেতরে উঠে ওই ব্যবসায়ীকে শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে নিচে নামান।

তিনি প্রতিবাদ করলে আসামিরা তাঁকে কিলঘুষি মারেন এবং ভয়ভীতি দেখান। পরে আসামিরা তাঁকে সড়কের পাশে থাকা একটি করাতকলের মালিকের (জুয়েল খান) বাড়ির ভেতরে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তাঁর কাছে থাকা ২০টি সোনার বার (প্রতিটির ওজন ১১৬.৬০ গ্রাম করে। মোট ওজন ২ কেজি ৩৩২ গ্রাম) ছিনিয়ে নিয়ে যান। পরে আসামিদের মধ্যে একজন সোনার বারগুলো নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে মাগুরার দিকে চলে যান।